নজরদারি: বনগাঁর রেস্তরাঁয়।
প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে রাখা হয়েছিল টুকরো করা মাংস। প্যাকেট খুলতেই দেখা গেল, ছাতা ধরে সাদা হয়ে গিয়েছে। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে।
কবে কেনা হয়েছে মাংস? উত্তর নেই রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষের মুখে।
বনগাঁ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় ওই নামী রেস্তরাঁটি বন্ধ করে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় তিরিশ কেজি মাংস।
শনিবার দিনভর অভিযান চলেছে বনগাঁ শহরের খাবারের দোকান, রেস্তরাঁ, হোটেলে। পুরসভার নজরদারি দলের সঙ্গে পুলিশও ছিল। বেশ কিছু দোকান থেকে সন্দেহজনক খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘এ দিন সংগ্রহ করা মাংসের নমুনা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে রাজ্যের ফুড ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করা হবে। পচা-বাসি মাংস মজুত করে রাখার অভিযোগে এ দিন একটি রেস্তরাঁ সিল করে দেওয়া হয়েছে। আইনগত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে পুরসভার চিকিৎসক সুকুমার সাউয়ের নেতৃত্বে দশজনের দল অভিযানে বেরোয়। দোকানে ঢুকে হেঁশেল, রেফ্রিজারেটর খুলে দেখেন। রান্না করা ও কাঁচা মাংস পরীক্ষা করেন। সন্দেহজনক মনে হলেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রেস্তরাঁর মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কাছে জানতে চাওয়া হয়, মাংস কবে কেনা হয়েছে। কবে রান্না হবে। অনেকেই সদুত্তর দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
এ দিন শহরের রেস্তরাঁয় বাসি মাংস মেলার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ভিড় জমে যায়। ক্ষোভ জানাতে থাকেন মানুষজন। কলকাতায় ভাগাড়-কাণ্ডের জের মফস্সলেও ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। মোবাইলে ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে। এক যুবক ‘ফেসবুক লাইভ’ও শুরু করে দেন।
শিমূলতলার বাসিন্দা যুবক মনীশ ঘোষ, বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী পারমিতা অধিকারীরা নিয়মিত রেস্তরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করেন। এ দিনের ঘটনার পরে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভাবতেই পারছি না, আমাদের এখানেও পচা-বাসি মাংস খাওয়ানো হচ্ছে। এখন থেকে আর রেস্তরাঁয় গিয়ে খাবার ইচ্ছেটাই চলে গেল।’’
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এই অভিযান নিয়মিত চলবে। কোনও অবস্থাতেই এ জিনিস বরদাস্ত করা হবে না।’’