প্ল্যাটফর্মের উপরে এ ভাবেই পুজো। — নি়়জস্ব চিত্র
প্ল্যাটফর্মে মন্দির। তার কাঁসর ঘণ্টার আওয়াজে ট্রেন-ঘোষণা শুনতে পাচ্ছেন না যাত্রীরা। সৌজন্যে ‘ভারতীয় রেল’।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্যারাকপুর স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের এক দিকে একটি প্রাচীন বটগাছ রয়েছে। তার তলায় কোনও এক সময় একটি বিগ্রহ ঠাঁই পায়। স্থানীয়েরা একচালা তৈরি করে বিগ্রহটিকে পুজো করতে থাকেন। ১২ কামরার লোকাল ট্রেন চালাতে বছর দু’য়েক আগে ওই প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয়। রেলযাত্রীদের অভিযোগ, তখনই স্থানীয় কিছু যুবক রেলের ঠিকাদারের উপর চাপ সৃষ্টি করে একচালা মন্দিরটি স্থায়ী ও পাকা করান।
আর তাতেই বিপত্তি। রেলযাত্রীদের অভিযোগ, মন্দিরে দিন-রাত মাইক, কাঁসর, ঘণ্টা বাজছে। শোনা যাচ্ছে না ট্রেন আসা-যাওয়ার ঘোষণা। প্ল্যাটফর্মের উপরেই প্রায় দিন আগুন জ্বালিয়ে যজ্ঞ হচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুণ্যার্থীর ভিড়ে প্ল্যাটফর্মে ভাল করে দাঁড়াতেই পারছেন না নিত্যযাত্রীরা। মন্দিরটি কেন্দ্র করে ফুল-মালা ও নানা পুজোর উপকরণের দোকানও গজিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। যাত্রীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মটি কার্যত তীর্থক্ষেত্রের আকার নিয়েছে।
রেলযাত্রীদের অভিযোগ, ব্যারাকপুরের স্টেশন মাস্টার, রেলসুরক্ষা বাহিনীর কর্তা-সহ অনেকের কাছেই ওই মন্দির সরানোর আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুই লাভ হয়নি। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, অফিসের ব্যস্ত সময়ে দুর্ভোগ বাড়ে।
রেল কর্তৃপক্ষ কি ওই মন্দির তৈরির অনুমতি দিয়েছিলেন? পূর্ব রেলের কর্তাদের দাবি, কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি। সে ক্ষেত্রে স্টেশন মাস্টার বা অন্য কর্তাদের নাকের ডগায় এত বড় মন্দির রাতারাতি তৈরি হল কী করে? জবাব অবশ্য মেলেনি।
তবে, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘ওই মন্দিরের কথা শিয়ালদহ ডিভিশনের ম্যানেজারকে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের অসুবিধার কথাও বলা
হয়েছে। শীঘ্রই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’