বিতর্কিত: এই নির্মাণ নিয়েই উঠছে নানা অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
সরকারি রাস্তা দখল করে নির্মাণ হচ্ছে চালকল!
শুধু তাই নয়, রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের মণ্ডল পাড়া রোডের কাছে একটি খালও ভরাট করা হচ্ছে চালকল নির্মাণের জন্য। এলাকাবাসী জানান, প্রশাসনের সব স্তরে অভিযোগ জানানোর পরে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এখনও তা ভেঙে ফেলা হয়নি। যে কোনও সময়ে কাজ শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে কাকদ্বীপ জেলা পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘বেআইনি দখল নিয়ে পুলিশ খবর পাওয়ার পরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে রাস্তা বা খাল দখলের বিষয়টি আমাদের এক্তিয়ারভুক্ত নয়।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এককালের আদিগঙ্গা এখন খালে পরিণত হয়েছে। তা বয়ে গিয়েছে বারুইপুর, জয়নগর এবং মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর দিয়ে। সংযোগস্থলের এক দিকে, রায়দিঘির মণি নদী। অন্য দিকে, ডায়মন্ড হারবারের হুগলি নদী। এক সময়ে ওই খাল দিয়ে নৌকোয় পারাপার হতো। এই পথই ছিল মানুষের একমাত্র অবলম্বন। দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় ১৯ কিলোমিটারের ওই খালের নাব্যতা কমে গিয়েছে।
কোথায় ওই খালের উপরে তৈরি হয়েছে বাড়ি, দোকান। কোথাও বা খাল পুকুরে পরিণত হয়েছে। এ বার মণ্ডলপাড়া মোড়ে মাসখানেক আগে খাল ও সরকারি রাস্তা দখল করে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে একটি চালকল করার বলে দাবি স্থানীয়দের। দিন কয়েক আগে এলাকার বাসিন্দারা দল বেঁধে প্রতিবাদ করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট হয়। পরে শাসকদলের নেতৃত্বে বিষয়টি মিটে যায়। এই অভিযোগ অস্বীকার করে চালকল মালিক নিমাই পুরকাইত বলেন, ‘‘আমার কেনা জমিতেই আমি দেওয়াল তুলছি। চাষিদের জমি আটকানোর প্রশ্নই ওঠে না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা তথা মথুরাপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সদস্য অভীক খাঁর অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের মদত ছাড়া এমন বেআইনি নির্মাণ হতে পারে না। তাঁর দাবি, ওই রাস্তায় বেশ কয়েকটি মোড়ের কাছে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শাসকদলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘যে রাস্তা দখল করে নির্মাণ হচ্ছে, তা পেরিয়েই চাষিরা মাঠে চাষ করতে যেতেন। তাঁরাও ওই পথটি আর ব্যবহার করতে পারছেন না।’’ আন্দোলনের চাপে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু দিন আগে বেআইনি ওই নির্মাণকারীকে নিয়ে থানায় বসা হয়েছিল। আমাদের শর্ত মেনে নিয়েছিল। কিন্তু পরে কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।