ভাঙা পথেই চলছে নিত্য যাত্রা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
সারাইয়ের ছ’-সাত মাসের মধ্যেই রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলে, কাদায় ভরে ওঠে। পথচারী দূর অস্ত্, গাড়ি চলাচলই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। খড়দহ পুর এলাকার অধিকাংশ রাস্তা নিয়ে এমন অভিযোগ পুরবাসীর। এর জন্য প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে জানান স্থানীয়েরা। আবার কবে এই রাস্তাগুলি সারাই করা হবে তা বলতে পারেননি খড়দহ পুর কর্তৃপক্ষও।
খড়দহ পুর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা খড়দহ স্টেশন রোড। স্টেশনের এক দিকে রহড়া এলাকা। অন্য দিকে, বিটি রোড। এই দুইয়ের যোগসূত্র খড়দহ স্টেশন রোড। প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। চলে টোটো, অটো, রিকশা, গাড়ি-সহ নানা যানবাহন। অভিযোগ, যানবাহনের চাপে দিনে দিনে বেহাল হচ্ছে রাস্তাগুলি। বলরাম স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সামনের মধুসূদন মুখার্জি রোডেরও অবস্থা খারাপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, হাসপাতালের সামনের রাস্তা এতটাই খারাপ যে, রোগী আনার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না অনেকেই। রহড়া থেকে কল্যাণনগর খালপাড় এবং মোড়লপাড়া যাওয়ার দু’টি রাস্তারই খুব খারাপ অবস্থা। রহড়া বাজারের এক ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন, বাজারে ঢোকার মুখে রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। সেখানে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ বারবার পুরসভাকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।
খড়দহ পুরসভার নতুন বোর্ড গঠন হয়েছে মাত্র তিন মাস। এক আধিকারিক জানান, পুরভোটের আগেই এই সব রাস্তাগুলির সংস্কার হয়েছিল। বিটুমিন ঢেলে কাজও হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, খড়দহ এলাকার রাস্তা ও শ্মশানের কাজে রাজ্য সরকার সাড়ে আট কোটি টাকা দিয়েছিল বছর দুই আগে। তাতে ওই সব রাস্তারও বড় করে সংস্কার হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ বারের পুর ভোটের আগেও তাপ্পি মারার কাজ হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেই কাজের মান এতটাই খারাপ যে মাস ঘুরতেই ফের পুরনো ভাঙাচোরা অবস্থা হয়েছে রাস্তাগুলির।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুর-কর্তৃপক্ষের একাংশের মধ্যেও সারাইয়ের কাজের মান নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের দাবি, পুর প্রধানের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পুরসভার বর্তমান পুর প্রধান তৃণমূলের তাপস পাল গত বোর্ডেরও প্রধান ছিলেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘এই রাস্তাগুলি দিয়ে অনবরত পাথরবাহী গাড়ি-সহ বিভিন্ন ভারী গাড়ি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তার বহন ক্ষমতা ততটা নয়। ফলে সহজেই ভেঙে যায়। ভারবাহী গাড়ির বহনযোগ্য রাস্তা করতে গেলে বিপুল খরচ করতে হবে। পুরসভার একার পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। তাই ভোটের আগেও তাপ্পি দেওয়া হয়েছিল। তাপ্পি দেওয়া ছাড়া আপাতত কোনও উপায় নেই।’’