প্রতীকী ছবি।
৬ বছর আগের কথা। দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস খুন হওয়ার পরে বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আদালতের সামনের সমস্ত গুমটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পরিষ্কার করা হয়েছিল জেলা প্রশাসনিক দফতরের সামনে রাস্তাও। কিন্তু ফের গুমটি ঘর থেকে শুরু করে রাস্তার উপরে বসে গিয়েছে হকার। তা নিয়েই তৈরি হয়েছে যাতায়াত থেকে শুরু করে নানা সমস্যা। তবে এ সব দখলদারি শীঘ্রই সরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও বারাসত পুরসভা।
বিধাননগর থেকে বনগাঁ, বাগুইআটি, দমদম থেকে ব্যারাকপুর, বসিরহাটের সব মানুষকেই নানা প্রয়োজনে আসতে হয় উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের অফিসে বা জেলা আদালতে। অথচ এমন গুরুত্বপূ্র্ণ এলাকা এবং রাস্তার প্রতিটি অংশ ছিল হকারদের দখলে। বিকেলের পরে সেই সব গুমটিতে অসামাজিক কাজকর্ম হতো বলেও অভিযোগ ওঠে।
২০১১ সালে রাজীব হত্যাকাণ্ডের পরে আদালত চত্বরে ক্রমশ দখল হয়ে যাওয়া রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু ফের সেখানে বসে পড়েছে হকার, চালু হয়ে গিয়েছে গুমটি। বিপজ্জনক ভাবে গ্যাস, স্টোভ জ্বালিয়ে চলছে ব্যবসা। সরু রাস্তায় এ সব পেরিয়েই কোনওমতে আদালতের অপরাধীও নামানো হচ্ছে সেখানে।
এ সব নিয়ে জেলাশাসক অন্তরা আচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘হকারদের ব্যবস্থা, রাস্তা চওড়া করা হবে। এ নিয়ে বারাসত পুরসভার সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।’’ বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারাসতে সরকারি উদ্যোগে তৈরি দু’টি কর্মতীর্থ বাজারে হকারদের পূর্নবাসন দেওয়া হবে। সেই কাজের পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কার করে সম্প্রসারণও করা হবে।’’
এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে ৫ কোটি টাকা মঞ্জুরও হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, বারাসতে বিধান মার্কেটের কাছেই তৈরি হয়েছে দোতলা কর্মতীর্থ। তার নীচে বড় রাস্তার দু’পাশের সমস্ত হকারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও আদালত চত্বরের হকারদের বড়বাজারের পাশে সরকারি বাজারে নিয়ে যাওয়া হবে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই চত্বরের গুমটি বা দখলদারি কি আদৌ রোখা যাবে? সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, রাজীব হত্যাকাণ্ডের পরে গোটা এলাকা পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরে ফের কী ভাবে তা দখল হয়ে গেল? তা হলে যে নজরদারির কথা বলা হয়েছিল, তার কী হল? আবার তো তা হলে বসে পড়তে পারে হকার।
তবে সে ব্যাপারে সুনীলবাবু বলেন, ‘‘এই কাজের শেষে এই রাস্তার উপরে আর কোনও হকার, বাজার থাকবে না।’’