ক্লাস শেষ হতেই ভেঙে পড়ল ছাদের অংশ

সবে মাত্র শেষ হয়েছে ক্লাস। ছেলেমেয়ের দল পিল পিল করে বেরিয়েছে বাইরে। সে সময়েই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ক্লাস ঘরের ছাদের চাঙড়!

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

বিপত্তি: ক্লাসঘরের এই দশা দেখে আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

সবে মাত্র শেষ হয়েছে ক্লাস। ছেলেমেয়ের দল পিল পিল করে বেরিয়েছে বাইরে। সে সময়েই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ক্লাস ঘরের ছাদের চাঙড়!

Advertisement

বুধবার ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পড়ুয়া, অভিভাবক শিক্ষক-শিক্ষিকা— সকলেই আতঙ্কিত। ঘরটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষিকা অপর্ণা বিশ্বাস বলেন, ‘‘পাশের হাইস্কুলের ঘর ভাড়ায় নিয়ে আমাদের স্কুলটি চলে। ওঁরা অনুমতি না দেওয়ায় স্কুল মেরামতির কাজই শুধু নয়, পড়ুয়াদের জন্য যে শৌচালয় তৈরির কথা, সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। ভাড়া বাড়ি হওয়ায় সরকারি টাকাও মিলছে না। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

প্রশাসন ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৪৯ সালে বসিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল। বসিরহাট হাইস্কুলের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ক্লাস শুরু হয়। স্কুলটিতে ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ২৫৬ জন পড়ুয়া। দীর্ঘ দিন ধরে মেরামতির অভাবে স্কুল বাড়ির ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। বিশেষ করে একতলা এবং দোতলার কয়েকটি ঘরের অবস্থা বেশ খারাপ বলে জানালেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শৌচালয়ে আব্রু ঢাকে না।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বেলা ৩টে নাগাদ স্কুল ছুটির পরে পরেই চতুর্থ শ্রেণির একটি ঘরের ছাদের অংশ খসে পড়ে। শিক্ষিকা শ্রেষ্ঠা ঘোষ, অভিভাবক রাজা মুখোপাধ্যায়, কৌশিক মল্লিক বলেন, ‘‘চাঙড় ভেঙে পড়াটা ভয়ঙ্কর ঘটনা। বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারত।’’ পরিকাঠামো নিয়ে আরও অভিযোগ আছে। শিক্ষকেরা জানালেন, শৌচালয় না থাকায় আশেপাশের বাড়িতে যেতে হয়। স্কুলে পানীয় জলের অবস্থায় বেশ খারাপ। খোলা জায়গায় দরজাবিহীন ভাঙাচোরা বাথরুমে গেলে ছাত্রীদের পাহারা দিতে হয়।

বসিরহাট পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শৈলেশকুমার পাল বলেন, ‘‘স্কুলের ছাদ ভেঙেছে খবর পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। ঘরটি আপাতত বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে।’’ স্কুলের শৌচালয়ের বেহাল দশাও খতিয়ে দেখেছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। ভাড়া বাড়ি হওয়ায় অনুমতি না পেলে সরকারি টাকা অনুমোদন করা কঠিন বলে জানালেন তিনি। তবে ওয়ার্ড কমিটির পক্ষে আলোচনার মাধ্যমে স্কুলবাড়ির জন্য অর্থের অনুমোদন পাওয়া সম্ভব বলেও মত শৈলেশবাবুর।

বসিরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন রায় বলেন, ‘‘আমাদের দেওয়া জায়গায় দোতলা বাড়ি তৈরি করেছে ওই স্কুল। ওই স্কুলের সামনে যেটুকু ফাঁকা জমি আছে, তা শিশুদের ব্যবহারের জন্য রাখা আছে। ওখানে শৌচালয় তৈরি করতে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ওদের স্কুলে যে সব ঘর আছে, তার কোনও একটি শৌচালয় হিসাবে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ তৈরি করে নিতে পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন