Child Trafficking

বাল্যবিবাহ, শিশু-নারী পাচার রুখতে কাজ করবে ‘কমব্যাট’

স্কুলছুট ও পাচার হয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের কাউন্সিলিং করে স্কুলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪৬
Share:

শিশু ও নারী পাচার রুখবে কমব্যাট। প্রতীকী চিত্র।

মাস দেড়েক আগে ক্যানিংয়ের গোপালপুর এলাকায় নাবালক-নাবালিকার বিয়ে রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। সেই ঘটনার পরে নাবালক-নাবালিকার বিয়ে বন্ধে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিল ক্যানিং মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসক প্রতীক সিংহের উদ্যোগে কিছুদিন আগে সমস্ত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের একত্রিত করে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। নাবালিকা বিয়ে বন্ধ, নারী, শিশু পাচার, নির্যাতন রুখতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছেন মহকুমাশাসক। ‘কমব্যাট’ নামে এই কমিটির চেয়ারম্যান মহকুমাশাসক। এ ছাড়াও কমিটিতে আছেন ক্যানিংয়ের এসডিপিও, মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, বিডিও, হাসপাতাল সুপার, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্কুল ইন্সপেক্টর, থানার ওসি, আইসিরা।

Advertisement

কমিটির সদস্যেরা প্রতি মাসে অন্তত একবার করে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসবেন। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হবে। সেখানে এই বিষয়ে যুক্ত জেলা বা মহকুমার অন্যান্য আধিকারিক, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে।

কমিটি ইতিমধ্যেই প্রতিটি স্কুলে কন্যাশ্রী ক্লাবকে সক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছে। একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে প্রতি মাসে স্কুলের ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতে হবে। নিয়মিত ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির উপরে নজরদারি চালানো হবে। স্কুলের বড় ছাত্রীদের নিয়ে বিশেষ দল তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরা নিচু ক্লাসের ছাত্রীদের নাবালিকা বিয়ে, পাচার-সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করবে।

Advertisement

স্কুলে স্কুলে অভিযোগ জমা নেওয়ার বাক্স রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে পড়ুয়ারা নিজেরাই পরিচয় গোপন রেখে নাবালিকা বিয়ের খবর, পাচারের খবর বা শিশু নির্যাতনের খবর জানাতে পারবে।

স্কুলছুট ও পাচার হয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের কাউন্সিলিং করে স্কুলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য স্কুলে নিয়মিত শিবির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মথুরাপুর ২ ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি নিজের স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের কাজে লাগিয়ে ওই এলাকায় নাবালিকা বিয়ে বন্ধ ও নারীপাচার রোধে ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। প্রতি বছরে এলাকায় গড়ে ৫০ জন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয় তাঁর স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের উদ্যোগে। প্রধান শিক্ষকের সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ক্যানিং মহকুমাতেও নাবালিকা বিয়ে বন্ধ, নারী ও শিশু পাচার, নির্যাতন রোধের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এই এলাকায় নারী ও শিশুপাচার, নাবালিকা বিয়ের মতো নানা রকম সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যেই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। স্কুলগুলিকে বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলি তা ঠিকমতো মেনে চলছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখতেই কমব্যাট কমিটি তৈরি হয়েছে। এই কমিটি পুরো বিষয়টি দেখভাল করবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন