Mushroom

Self help group: মাশরুম চাষ করে সংসারের হাল ফিরছে পুষ্পদের

মাশরুম চাষ শুরু করেছেন বানতলা চর্মনগরী-লাগোয়া তাড়দহ পঞ্চায়েতের আন্দুলগড়িয়া গ্রামের মহিলারা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ০৭:৩০
Share:

সাফল্য: মাশরুম চাষ করে স্বনির্ভর হচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। ছবি: সামসুল হুদা।

সংসারের হাল ফেরাতে বাড়ির পুরুষদের পাশাপাশি স্বনির্ভর হচ্ছেন গ্রামের মহিলারাও। স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে মাশরুম চাষ করছেন তাঁরা।

Advertisement

বাড়ির পুরুষরা বেশিরভাগ কাজ করেন বানতলা চর্মনগরীতে। তাতে যা আয় হয়, তাতে দু'বেলা দু'মুঠো অন্ন কোনও মতে জোগাড় হয়। কিন্তু ট্যানারিতে দিনের পর দিন বিষাক্ত রাসায়নিক, ধুলো, ধোঁয়ার মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পুরুষেরা। দরকার পুষ্টিকর খাবার। সে জন্য চাই বাড়তি রোজগার। সংসারে শখ সৌখিনতা মেটাতেও দরকার বাড়তি আয়। এই পরিস্থিতিতে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন বানতলা চর্মনগরী-লাগোয়া তাড়দহ পঞ্চায়েতের আন্দুলগড়িয়া গ্রামের মহিলারা। আর তাতেই আসছে সাফল্য। পরিবারের সদস্যদের ভাল খাবার দেওয়ার পাশাপাশি সংসারে স্বচ্ছলতা আসছে।

ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে স্বনির্ভর হচ্ছেন মহিলারা। দিনভর হাঁড়ি-হেঁশেল সামলেও তাঁরা তৈরি করছেন জৈব সার, জৈব ফসল। প্রতিদিন এ কাজের জন্য দু’তিন ঘণ্টা সময় বের করতে পারলেই আসছে বাড়তি রোজগার।

Advertisement

ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে আন্দুলগড়িয়া-বিষ্ণুপ্রিয়া এসএইচজি গ্রুপ তৈরি করে কাজ করছেন মহিলারা। বাসন্তী রাজ্য সড়কের ভোজেরহাট বাজার থেকে সোনারপুর যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে তাড়দহ পঞ্চায়েত। সেখানেই আন্দুলগড়িয়া গ্রামে নানা রকম কাজ করছেন পুষ্প মণ্ডল, প্রীতিলতা সর্দাররা। হাতের কাজ করে বাড়তি রোজগার করছেন পাড়ার গৃহবধূ, বেকার যুবতীরা। আর আছে মাশরুম চাষ। সেই সঙ্গে পুঁতির হার, দুল, লকেট প্রভৃতিও তৈরি করছেন। বড়বাজার থেকে সরঞ্জাম কিনে এনে তা দিয়েই মেয়েদের সাজসজ্জার বিভিন্ন জিনিস তৈরি হয়। সবলা মেলা, সরস মেলা-সহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মেলায় স্টল দিয়ে সেই জিনিস নিজেরাই বিক্রি করেন তাঁরা। পাশাপাশি বড়বাজারের পাইকারি বাজারেও তাদের তৈরি জিনিস সরবরাহ করা হয়।

ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার জানালেন, ব্লকের ৯টি অঞ্চলে মোট ১২১২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে সাড়ে ১৪ হাজার মহিলা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। ওঁদের উৎসাহ ও সহায়তা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ৫৯৬টি দলকে মোট ১৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

তবে এই মুহূর্তে সব থেকে জনপ্রিয় ও লাভদায়ক কাজ হল মাশরুম চাষ। কোদাল, কাস্তে, লাঙল ছাড়াই যে চাষ করা যায়। গৃহবধূ পুষ্প মণ্ডল বলেন ‘‘স্বামী নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। তা দিয়ে ভাল করে সংসার চলে না। তাই বিকল্প রোজগার হিসেবে আমরা মাশরুম চাষ করছি।’’ আর এক গৃহবধূ সুলতা সর্দার বলেন, ‘‘এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ বানতলা চর্মনগরীতে কাজ করেন। কঠোর পরিশ্রম যাতে করতে পারেন, সে জন্য সস্তায় পুষ্টিকর খাবার হিসেবে আমরা মাশরুমকে বেছে নিয়েছি।’’ মাত্র পঁচিশ টাকা দিয়ে মাশরুমের দানা কিনে তার থেকে প্রমাণ সাইজের মাশরুম পাওয়া যায় বলে জানালেন মহিলারা। বর্তমানে বাজারে একশো টাকা কেজি দরে সেই মাশরুম বিক্রি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন