ভবন তৈরি, মেলে না পরিষেবা

উদ্বোধন হয়েছিল ঘটা করে। কথা ছিল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকায় দশ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে। ডাক্তার-নার্স থাকবেন। চিকিৎসা পাবেন আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

উদ্বোধন হয়েছিল ঘটা করে। কথা ছিল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকায় দশ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে। ডাক্তার-নার্স থাকবেন। চিকিৎসা পাবেন আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের মানুষ। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্র পুরোদমে চালু তো হয়ইনি, উল্টে আউডোরেও রোজ ডাক্তারবাবুকে পাওয়া যায় না।

Advertisement

এ রকম অবস্থায় চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বিরক্ত সাগরের মহেন্দ্রগঞ্জ এলাকার মানুষ। কবে পুরোপুরি পরিষেবা মিলবে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, তারও কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। মূলত গ্রামীণ এলাকায় ডাক্তার না পাওয়াতেই এই সমস্যা বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

২০১০ সালে নতুন‌ তৈরি হওয়া বাড়িতে আর চালু হয়নি প্রস্তাবিত ১০ শয্যার মহেন্দ্রগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ধসপাড়া ১ পঞ্চায়েতের ওই গ্রামই নয়, পাশাপাশি অন্তত সাতটি গ্রামের মানুষেরই আশাভঙ্গ হয়েছে।

Advertisement

যে সমস্ত পরিবার হাসপাতালের নতুন বাড়ির জন্য জায়গা দিয়েছিল, তারাই এখন আক্ষেপ করছেন। মহেন্দ্রগঞ্জে এ রকমই একটি পরিবারের সদস্য মানিকচন্দ্র পাহাড়ির দাবি, তাঁদের যৌথ পরিবার থেকে হাসপাতালের জন্য জমি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো কাজ হয়নি। মানিকবাবুর কথায়, ‘‘একজন ডাক্তারবাবু সপ্তাহের তিন দিন থাকেন। বাকি সময়টা আমাদের রুদ্রনগর গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হয়। তা অনেকটাই দূরে। গত বছর আমরা নতুন হাসপাতালের বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু হয়নি।’’ এই আক্ষেপ রয়েছে মহেন্দ্রগঞ্জের মানসী আচার্য, উত্তর হারাধনপুরের কমলা রাউতদেরও।

সব থেকে সমস্যা হয় রাতে। গৃহবধূ কমলা রাউত বলেন, ‘‘মাস ছ’য়েক আগে বাচ্চার পেটে হঠাৎ ব্যথা হয়েছিল। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখলাম, ডাক্তারবাবু নেই। বাধ্য হয়েই প্রায় এক ঘণ্টা দূরত্বে রুদ্রনগর গ্রামীণ হাসপাতালে ছুটেছি।’’ নগেন্দ্রগঞ্জের পাশাপাশি গোবিন্দপুর, দেবীমথুরাপুর, ধসপাড়া, খাসরামকর, কয়লাপাড়ার মতো এলাকার মানুষেরও ভরসার জায়গা হতে পারত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। কেন চালু হল না দশ শয্যার হাসপাতাল? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি করা হয়, বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে, কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় ডাক্তার-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব রয়েছে বলে হাসপাতাল চালু করা যাচ্ছে না।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কম করে দু’জন ডাক্তার হলেই ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু ডাক্তাররা কাজে যোগ দিয়েও শেষে চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। পর পর দু’বার এ রকম হওয়ার জন্য কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন