বিক্ষোভ: সাফাইকর্মীদের। নিজস্ব চিত্র
স্থায়ীকরণ দূরের কথা, দীর্ঘ দিন ধরে সাফাইয়ের কাজ করলেও অস্থায়ী মজুর করা হয়নি তাঁদের। তার ফলে শুধু মজুরিই কম মেলে না, বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। অন্তত অস্থায়ী মজুর হিসাবে যেন স্বীকৃতি মেলে, এই দাবিতে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন হালিশহর পুরসভার শ’দুয়েক সাফাই কর্মী।
এই পরিস্থিতিতে শহরে জঞ্জাল সাফাইে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পুরসভার কর্মীরা। তবে পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বক্তব্য, ‘‘পুরসভার নিজস্ব স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। বাকিরা কাজ বন্ধ করলে তার প্রভাব পড়বে না। তবুও পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’
কর্মবিরতির বিষয়টি আগে থেকে জানানো হয়নি। মঙ্গলবার কাজে যোগ দেননি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিযুক্ত সাফাই কর্মীরা। এ দিন সকালে তাঁরা একজোট হয়ে পুরসভার গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের জঞ্জাল পরিষ্কার, নর্দমা পরিষ্কার সহ একাধিক নাগরিক পরিষেবামূলক কাজ এই সাফাই কর্মীরাই করেন। মাসে সব দিন কাজ না পাওয়ার কারণে এই কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তা ছাড়া, এই কাজের জন্য যে মজুরি দেওয়া হয়, তা অনেক কম বলেও তাঁদের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার, আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেই শহরে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় এ দিন জঞ্জাল সাফাই হয়নি বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারী সাফাইকর্মী মনোজ বাঁশফোঁড়, রবি হাড়ি এ দিন বলেন, ‘‘স্থায়ী, অস্থায়ী পুরকর্মীর সংখ্যায় অনেক কম। গোটা পুরসভা এলাকায় জঞ্জাল আমরা সাফাই করে থাকি। অথচ আমরাই বঞ্চিত হচ্ছি।’’ তিনি জানান, দশ বছর যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের দৈনিক মজুরি ২২১ টাকা। আর পাঁচ বছর ধরে যারা কাজ করছে তারা ১৭১ টাকা দৈনিক মজুরি পান। মাসে ২০-২৫ দিন কাজ মেলে।
তাঁরা দাবি জানান, বেতন বাড়িয়ে দৈনিক সাড়ে তিনশো টাকা করতে হবে। তাঁদের অস্থায়ী পুরকর্মীর মর্যাদা দিতে হবে। অস্থায়ী মর্যাদা না পেলে তাঁরা স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন দফতরের পরিষেবা পাচ্ছেন না। বুধবার তাঁরা পুরপ্রধানকে স্মারকলিপি দিলেও তাঁদের দাবি পূরণ হয়নি। সেই জন্য বৃহস্পতিবার ও তাঁরা কাজে যোগ দেননি। দাবি মেটার আশ্বাস না মেলা পর্যন্ত তাঁদের কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।