আনাচে কানাচে ঘুরছে সাপ, আতঙ্কে গোটা গ্রাম

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা থেকে নামতে গিয়ে এক ব্যক্তির চক্ষু চড়কগাছ! দেখেন ফণা তুলে বসে সাপ। কোনও রকমে তাকে সরিয়ে এক ছুটে অন্য ঘরে। এমন অবস্থা এখন ক্যানিঙের বেশির ভাগ জায়গাতেই।

Advertisement

সামসুল হুদা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৮
Share:

সাপ থেকে বাঁচতে। নিজস্ব চিত্র।

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা থেকে নামতে গিয়ে এক ব্যক্তির চক্ষু চড়কগাছ! দেখেন ফণা তুলে বসে সাপ। কোনও রকমে তাকে সরিয়ে এক ছুটে অন্য ঘরে। এমন অবস্থা এখন ক্যানিঙের বেশির ভাগ জায়গাতেই। আচমকা এখানে সাপের উপদ্রব বেড়েছে বলে জানান বাসিন্দারা।

Advertisement

সুন্দরবন এলাকায় এমনিতেই জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। আছে সাপও। প্রায়ই বাঘে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তারপরে এখন আবার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। বাঘ কুমির তো ছিলই। সাপের ছোবলেও প্রায়ই মৃত্যু হচ্ছে মানুষের।

ক্যানিং ১ ব্লকের গোলাবাড়ির কাছারিঘাট পাড়ায় সাপের উপদ্রব বেশি বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। হঠাৎ ঘরে বাইরে সাপ ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি ওই এলাকা থেকে প্রায় ১২টি কেউটে সাপ ধরা হয়। কয়েকদিন আগে ওই পাড়ার ইন্দ্রজিৎ সমাদ্দারকে কেউটে সাপে কামড়ায়। তাঁকে ক্যানিং হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর আতঙ্ক এখনও কাটেনি। শুধু তিনি নন ওই গ্রামের বাসিন্দারা সাপের ভয়ে এখন আতঙ্কিত। বন দফতরের মাতলা ২ রেঞ্জার নীলরতন গুহ বলেন, ‘‘ওই এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে। বন দফতরের টিম গিয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

বাসিন্দারা জানান, রাতে-দিনে যখন তখন মাটির বাড়ি, পাকা বাড়ির মেঝেতে, ঘরের চালে ঘুরে বেড়াচ্ছে কেউটে সাপ। অনেকে জাল দিয়ে ঘর ঘিরে রাখারও চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হচ্ছে না। অনেকেই লোটাকম্বল গুটিয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে চাইছেন। এই সমস্যা এ বার বেশি দেখা যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোরসেলিন শেখ, হায়দার সর্দাররা বলেন, ‘‘ঘরের মধ্যে বা আশপাশে সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কী করব বুঝতে পারছি না। যে ভাবে সাপের উপদ্রব বাড়ছে কেউ আর ভয়ে ঘরে থাকতে চাইছেন না।’’

সাপ নিয়ে নানা সচেতনতামূলক কাজ করে ক্যানিঙের যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা। ওই সংস্থার সম্পাদক বিজন ভট্টাচার্য জানান, সম্প্রতি ক্যানিঙে সাপের কামড়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এই কারণেই আরও আতঙ্ক বেড়ে গিয়েছে। এই সময় ডিম ফুটে কেউটে সাপের বাচ্চা জন্মায়। বাচ্চা হওয়ার পর তারা গর্ত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে। সে কারণেই এখন সাপকে আনাচে কানাচে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। সাপের উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য ব্লিচিং পাউডার দিয়ে গর্তগুলি বুজিয়ে দিতে হবে। তা হলে সাপ আর বাইরে বেরোতে পারবে না। তবে একটু দুরত্ব বজায় রেখে গর্তে ব্লিচিং ছড়ানো উচিত। তিনি বলেন, ‘‘এই খবর পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের টিমকে ওই এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।’’

ওই এলাকা তথা ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান খতিব সর্দার বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত থেকে ওই এলাকায় ব্লিচিং ছড়ানোর ব্যবস্থা করছি। আর কী করা যায় তা দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন