বৃদ্ধাকে মারধরে অভিযুক্ত ছেলে

ছেলে আর তাঁর পরিবার মারধর, খুনের হুমকি-সহ নানা অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। এক ছেলের বৌ এবং নাতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০২
Share:

ছেলে আর তাঁর পরিবার মারধর, খুনের হুমকি-সহ নানা অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। এক ছেলের বৌ এবং নাতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

ঘটনাটি হিঙ্গলগঞ্জ থানার মামুদপুরের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনচারী মান্না এবং তাঁর স্ত্রী রূপলেখার তিন ছেলে, দুই মেয়ে। বড় ছেলে সলিল পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মেজো শিশির হিঙ্গলগঞ্জের প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছোট ছেলে সমীর পোশাক ব্যবসায়ী। সম্পত্তি নিয়ে বনচারীবাবু এবং তাঁর সন্তানদের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘ দিনের। পড়শিরা বার কয়েক উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি।

ছেলেরা সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মাস কয়েক আগে মামলা করেন বনচারীবাবু। তাঁর দাবি, সেই মামলার ভিত্তিতে বসিরহাট আদালতের বিচারক ছেলেদের খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এর জেরে ছেলেদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব আরও বাড়ে।

Advertisement

৩০ সেপ্টেম্বর হিঙ্গলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগে বনচারীবাবু জানান, ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে মেজো ছেলে, বৌমা এবং তাদের দুই ছেলে বৃদ্ধা রূপলেখাদেবীকে মারধর করেছেন। অভিযোগ পেয়ে শিশিরের স্ত্রী চম্পা ও ছেলে কিশোর মান্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শিশিরবাবু আবার বাবা, মা এবং বোনেদের বিরুদ্ধে মারধরের পাল্টা অভিযোগ করেছেন থানায়। তাঁদের দাবি, বাবা তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসাচ্ছেন।

বনচারীবাবু বলেন, ‘‘মেজো ছেলে, মেজো বৌমা এবং তাদের ছেলে মিলে আমার স্ত্রীকে মারধর করে। মারের চোটে স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে যান। তারপর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে মনে করে ওঁকে একটা ঘরে রেখে চলে যায় সকলে।’’ বৃদ্ধের দাবি, মেয়ে-জামাই, পড়শিরা এসে স্ত্রীকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকর হাসপাতালে। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পায়ের অস্ত্রোপচার করা হয় রূপলেখাদেবীর। তিনি এখন এক মেয়ের বাড়িতে রয়েছেন। বনচারীবাবু এবং রূপলেখাদেবীর অভিযোগ, মেজো ছেলের হুমকির ভয়ে তাঁরা হিঙ্গলগঞ্জে নিজের বাড়ি পর্যন্ত ফিরতে পারছেন না।

বাবা-মায়ের তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিশিরবাবু। তাঁর দাবি, বাবা একাধিক মিথ্যা মামলা করেছেন। শিশিরবাবুর কথায়, ‘‘ঘটনার দিন আমি স্কুলে ছিলাম। বড় ভাই বাড়ি ছিল না। সে সময়ে মা সামান্য পারিবারিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আমার স্ত্রীকে গালিগালাজ, মারধর করেন। ছোট ছেলে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারা হয়। ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে আমার মা আহত হয়েছেন। ওঁর গায়ে কেউ হাত তোলেনি।’’

শিশিরবাবুর সঙ্গে অবশ্য একমত নন তাঁর বড়দা সলিলবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘সম্পত্তির ভাগ নিয়ে গোলমাল চলছে ঠিকই, কিন্তু বাবা-মাকে মারধর করা মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সঠিক কাজ করেছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন