মহিলাদের জন্য শুরু হল বিশেষ প্রকল্প

শ্যামনগরের নুরবানু বিবি মদ্যপ স্বামীর অত্যাচারে ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন বাপের বাড়ি। সেখানে চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম দশা তাঁর। দিনমজুরি করে কোনও মতে দিন গুজরান করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কুলপি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৪
Share:

উদ্বোধন: দিশারী প্রকল্পের সূচনা। নিজস্ব চিত্র

ছ’বছর আগে হৃদরোগে মারা গিয়েছেন স্বামী জামাল শেখ। সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনি। তাঁর বিধবা স্ত্রী আসমিরা অনেক কষ্ট করে সন্তানদের জন্য অন্ন জোগাড় করে চলেছেন।

Advertisement

শ্যামনগরের নুরবানু বিবি মদ্যপ স্বামীর অত্যাচারে ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন বাপের বাড়ি। সেখানে চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম দশা তাঁর। দিনমজুরি করে কোনও মতে দিন গুজরান করছেন।

এ রকম দুঃস্থ ও অসহায় মহিলাদের উন্নতির জন্য রাজ্য জুড়ে পুলিশের উদ্যোগে একটি প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। সুন্দরবন পুলিশের উদ্যোগে সুন্দরবন এলাকায় প্রকল্পটির সূচনা হল।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে কুলপি থানা ভবন চত্বরে সুন্দরবন জেলা পুলিশ ও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘দিশারী’ নামের ওই প্রকল্পের উদ্বোধন হল। উদ্বোধন করেন রাজ্যের কারিগরি বিভাগের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। মন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘এই প্রকল্পটি অসহায় মহিলাদের দিকে লক্ষ্য রেখেই চালু করা হচ্ছে। মহিলারা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সংসারের হাল ধরতে পারলে তাঁদের ছেলেমেয়েরাও ভাল ভাবে মানুষ হয়ে উঠবে।’’

প্রাথমিক ভাবে এলাকার মোট ৬০ জন মহিলাকে স্বাবলম্বী করে তোলার এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ২০ জন মহিলাকে নিয়ে তৈরি হবে একটি ‘ব্যাচ’। তাঁদের সেলাই শেখানো হবে। পুরো প্রকল্পটির আর্থিক সহায়তার জন্য রয়েছে ওই বেসরকারি ব্যঙ্কটি।

এ দিন মঞ্চে উপস্থিত সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘আর্থিক সঙ্কটের কারনে অনেক নারী পাচার হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের উদ্ধার করে এনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলা হবে, যাতে সমাজের মূলস্রোতে তাঁরা ফিরতে পারেন।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ওই ব্যাঙ্কের মেন্টর চন্দ্রশেখর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশে আমাদের ব্যাঙ্কের মোট ১ কোটি ৫৬ লক্ষ গ্রাহক। এঁদের মধ্যে মহিলা গ্রাহকই ১ কোটি ৩০ লক্ষ। মহিলারা আর্থিক ভাবে যত সচ্ছল হবেন সংসারে ততই উন্নতি হবে।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে সুন্দরবন জে‌লা পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘দিশারী মানে, যা দিশা দেখায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব ঘরের মহিলারা স্বাবলম্বী হয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন। নিজেদের সংসারকে দিশা দেখাতে পারবেন।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মথুরাপুরের সাংসদ চৌধুরীমোহন জাতুয়া, কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার, কাকদ্বীপ এসডিপিও অনিল রায় প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন