ইছামতীর দূষণ রুখতে পদক্ষেপ বনগাঁ শহরে

এ বার বনগাঁ পুরসভার তরফে ইছামতী-দূষণ ঠেকাতে ভাড়া করে আনা হয়েছে একটি হাইড্রা মেশিন— এক ধরনের বড় ক্রেন। বিসর্জন দেওয়ার পরেই ওই মেশিন দিয়ে প্রতিমা নদীপাড়ে তুলে ফেলছেন পুরকর্মীরা। ফলে প্রতিমার রঙ, মাটি এ বার আর নদীতে মিশছে না।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২১
Share:

সাফাই: প্রতিমা বিসর্জনের পরে সাফাইয়ের কাজ চলছে বনগাঁর ইছামতীতে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বিসর্জনের কারণে ইছামতীর জল যাতে দূষিত না হয়, সে জন্য পদক্ষেপ করেছে বনগাঁ পুরসভা।
দশমীর দিন থেকেই বনগাঁ শহরে ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। আগে প্রতিমা জলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরকর্মীরা ঘাট থেকে তা টেনে নিয়ে গিয়ে মাঝনদীতে ছেড়ে দিতেন। কয়েক দিন পরে কাঠামো নদী থেকে তোলা হত। ততক্ষণে অবশ্য প্রতিমার রঙ জলে মিশে গিয়ে দূষণ যা হওয়ার তা হয়ে যেত।

Advertisement

এ বার প্রতিমা নদীতে ডোবানোর পরেই পুরকর্মীরা তা তুলে নিচ্ছেন জল থেকে। ফলে জলদূষণ অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।

এ বার বনগাঁ পুরসভার তরফে ইছামতী-দূষণ ঠেকাতে ভাড়া করে আনা হয়েছে একটি হাইড্রা মেশিন— এক ধরনের বড় ক্রেন। বিসর্জন দেওয়ার পরেই ওই মেশিন দিয়ে প্রতিমা নদীপাড়ে তুলে ফেলছেন পুরকর্মীরা। ফলে প্রতিমার রঙ, মাটি এ বার আর নদীতে মিশছে না।

Advertisement

পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘ইছামতীতে এমনিতেই নাব্যতা নেই। তার উপরে প্রতি বছর প্রতিমা বিসর্জনের ফলে নদী দূষিতও হত। এ বার বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে পুরকর্মীরা কাঠামো তুলে ফেলছেন। ফুল-বেলপাতাও জলে ফেলা হয়নি। পুরসভার পক্ষ থেকে এ সব নদীপাড়ে ফেলার আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

এলাকার প্রবীণ মানুষ জন জানালেন, অতীতে নদীতে স্রোত ছিল। জোয়ার-ভাটা খেলত। ফলে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হলেও নদী যে দূষিত হচ্ছে, সে বিষয়টা সে ভাবে নজরে পড়ত না। এ বার পুরসভার ভূমিকায় সকলেই খুশি। পরিবেশকর্মী অজয় মজুমদার বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে ইছামতীর জল দূষণ ঠেকানোর দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এ বার পুরসভার এই পদক্ষেপের ফলে দূষণ বন্ধ হবে। আমরা খুশি।’’

শহর এলাকায় নদী থেকে প্রতিমা তোলার ব্যবস্থা হলেও পঞ্চায়েতের গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য সে ব্যবস্থা দেখা গেল না। গাইঘাটা এলাকায় রয়েছে যমুনা নদী। সংস্কারের অভাবে তা মজে গিয়েছে। জোয়ার-ভাটা খেলে না। বছরের বেশির ভাগ সময়ে শ্যাওলা কচুরিপানায় মুখ ঢেকে থাকে এ নদী। বহু দিন হল নাব্যতা হারিয়েছে যমুনা। প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ায় জল আরও দূষিত হচ্ছে। কাঠামো তোলারও ব্যবস্থা এখানে নেই। প্রতিমার ফুল-বেলপাতা, সাজ-সরঞ্জাম সব জলেই ভেসে থাকে।

গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস অবশ্য জানান, যমুনার দূষণ বন্ধ করতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যমুনা ছাড়াও এই মহকুমায় রয়েছে নাওভাঙা কোদালিয়া-সহ আরও কয়েকটি নদী। ওই সব নদীতেও প্রতিমার কাঠামো তোলার ব্যবস্থা নেই। ফলে জল দূষিত হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে যদিও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সব নদী থেকেই কাঠামো তুলে ফেলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন