শরীরের সমস্যা নিয়েও লড়ে যাচ্ছে শুভাশিস

ঈশান মেমোরিয়াল হাইস্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের নজর আছে ছেলেটির ব্যাপারে। এতটুকু অসুবিধা হতে দিচ্ছেন না তাঁরা।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০২:২০
Share:

লড়াই: শুভাশিস। নিজস্ব চিত্র

জন্ম থেকেই জটিল স্নায়ুরোগে ভোগে শুভাশিস। ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা শরীরে। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ। এ বার ‘রাইটার’ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে সীতারামপুর হাইস্কুলের ওই ছাত্র। বুধবার ভূগোল পরীক্ষা ভালই হয়েছে বলে জানিয়েছে।

Advertisement

কাকদ্বীপের সীতারামপুরের বাসিন্দা শুভাশিস মাকড় ছোট থেকেই সেরিব্রাল পালসির শিকার। জন্মের পর থেকে স্কুলে যাওয়ার বয়স পর্যন্ত ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা ছিল। বাবা-মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং চিকিৎসায় তা এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু একা হাঁটতে পারে না।

সীতারামপুর হাইস্কুলের ওই ছাত্রের এ বার সিট পড়েছে কামারহাটের ঈশান মেমোরিয়াল হাইস্কুলে। বাবা অসিতবরণবাবু ছোট থেকে স্কুলে নিজেই পরীক্ষা দিয়েছে ছেলে। কিন্তু খুব বেশি কথা বলা বা টানা লেখার অভ্যেস তার নেই। তাই মাধ্যমিকে ওই স্কুলেরই নবম শ্রেণির ছাত্রী কোয়েল ঘরামি তার হয়ে লিখে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। অসিতবাবুর কথায়, ‘‘ছোটবেলায় স্কুলে পাঠানোর পর বেঞ্চ থেকে পড়ে যেত। ওকে আবার ধরে বসিয়ে দিত সহপাঠী বা শিক্ষকেরা। ওর মায়ের চেষ্টাতেই আমার ছোট ছেলে এতটা দূর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছে।’’ মা অঞ্জনাদেবী বলেন, ‘‘ছেলে যতটা পড়তে পারবে, আমি পড়াব। আমি ওর জন্য গর্বিত।’’

Advertisement

ঈশান মেমোরিয়াল হাইস্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের নজর আছে ছেলেটির ব্যাপারে। এতটুকু অসুবিধা হতে দিচ্ছেন না তাঁরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ বৈরাগী বলেন, ‘‘এতটা কঠিন পথ চলার জন্য যে মানসিক জোর ও দেখিয়েছে, তাতে আরও পাঁচটা ছেলে উৎসাহ পাবে।’’

শুভাশিসের এই পথ চলাতেই সকলের আনন্দ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন