ভূপতিত: ভাঙল গাছ। বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
ভোর রাতে হাওয়ার শোঁ শোঁ শব্দেই ঘুম ভেঙেছিল বাড়ির লোকের। কিছু বোঝার আগেই এক বিকট শব্দ। বাড়ির চালের উপরে একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। সরাসরি খাটেই এসে পড়ত গাছটি। কিন্তু ঘরে থাকা আলমারিতে তা আটকে যায়।
রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর পানচিতা গ্রামে। বেবি বালা নামে এক মহিলার মাথায় আঘাত লেগেছে। তিনি বলেন, ‘‘আলমারির জন্যেই প্রাণটা বাঁচল। না হলে কী হত জানি না।’’
ভোর ৪টের ওই ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। আর তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বনগাঁ ও বাগদার বেশ কিছু গ্রাম। বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়ছে বিদ্যুতের খুঁটি। ঘরবাড়ির প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে পাট, ধান ও তিলের।
দিন কয়েক আগেই বনগাঁ মহকুমার বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। ফের এমন কাণ্ডে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। ধর্মপুকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, ‘‘পানচিতা, চাঁদা, রায়পুর সবাইপুর এলাকায় ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে। ১০টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে।’’ স্থানীয় চাষি উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, ‘‘তিন বিঘা জমিতে পাট করেছিলাম। শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ।’’ দেখা গেল এক চিকিৎসকের চেম্বার ঝড়ে উড়ে চলে গিয়েছে।
বাগদা ব্লকের ঘুনার মাঠ, সন্তোষা কলোনি, খড়ের মাঠ, পাঁচপোতা, নাটাবেড়িয়া, আউলডাঙা, আন্দুলপোতার মতো বহু এলাকায় ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কম বেশি ৫০টিরও বেশি বাড়ি ভেঙে পয়েছে। ঘুনার মাঠ এলাকার বাসিন্দা দেবাংশু সরকার নামে এক শিশু ঝড়ে চাপা পড়ে জখম হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাগদার বিধায়ক দুলাল বর বলেন, ‘‘বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মানুষ এখন আশ্রয় খুঁজছেন। ভোটের কারণে আমরা জনপ্রতিনিধিরা সাহায্য করতে পারছি না। প্রশাসনকে বলেছি দ্রুত পদক্ষেপ করতে।’’ বাগদা ব্লকেও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।