হেলমেট ছাড়া পথে কেন, পড়ুয়ার প্রশ্ন শুনে লজ্জিত বাইক আরোহী

জলপাই রঙের জামা পরা স্কুল ছাত্রী হাত তুলে মোটরবাইক আরোহীর সামনে দাঁড়াতেই হকচকিয়ে গেলেন চা‌লক। কেন হেলমেট পরে গাড়ি চালাচ্ছেন না, জানতে চাইতেই ভয়ে ভয়ে বললেন, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়োয় বাড়িতে হেলমেট ফেলে রেখে এসেছি। এমন ভুল আর হবে না।’’

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৫
Share:

এ ভাবে চলাফেরা কি ঠিক? বোঝাচ্ছে পডুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

জলপাই রঙের জামা পরা স্কুল ছাত্রী হাত তুলে মোটরবাইক আরোহীর সামনে দাঁড়াতেই হকচকিয়ে গেলেন চা‌লক। কেন হেলমেট পরে গাড়ি চালাচ্ছেন না, জানতে চাইতেই ভয়ে ভয়ে বললেন, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে। তাড়াহুড়োয় বাড়িতে হেলমেট ফেলে রেখে এসেছি। এমন ভুল আর হবে না।’’

Advertisement

এমন অনেক হেলমেটহীন মোটরবাইক চালক-সওয়ারই বুধবার লজ্জায় পড়লেন পথে বেরিয়ে। হেলমেট পরা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এ দিন দুপুরে পথে নেমেছিল স্কুল পড়ুয়ারা। মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের শ’খানেক পড়ুয়া ও এনসিসি-র ছাত্রছাত্রী স্কুল মোড়ে দাঁড়ায়। এক দিকে রায়দিঘিগামী ও অন্য দিকে মথুরাপুরগামী বাইক আরোহীদের এক এক করে দাঁড় করায় তারা। যাঁরা হেলমেট ছাড়া গাড়ি চালাচ্ছেন, তাঁদের সকলকে সতর্ক করেছে ছাত্রছাত্রীরা। হেলমেট পরার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু আইন বাঁচানোর জন্যই নয়, নিজের প্রাণ বাঁচাতেও হেলমেট পরাটা কত জরুরি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা কাকু-জেঠুদের বলে, ‘‘আপনার জীবনের উপরে একটা পরিবার নির্ভর করছে। এ ভাবে নিজের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না।’’

যাঁরা হেলমেট পরে বেরিয়েছিলেন, তাঁদের জন্য ছিল ফুলের তোড়া। বেশ করেক জনের হেলমেট পরা বাইক আরোহীকে ফুলের তোড়া হাতে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। প্রথমটায় হকচকিয়ে গেলেও পরে একগাল হেসে এগোন ওই সব বাইক চালকেরা।

Advertisement

যাঁরা হেলমেট পরে বেরোননি, এমন‌ কয়েক এক বাইক চালক সামসুল মোল্লা বললেন, ‘‘আমি রায়দিঘিতে এক আত্মীয়র বাড়িতে যাব বলে বেরিয়েছি। এখনও হেলমেট কেনা হয়নি। অন্যের হেলমেট ধার করে কোনও মতে পেট্রোল সংগ্রহ করছি। তবে এই কচিকাঁচাদের কাছে যা শুনলাম, তারপরে আর হেলমেট না কিনে থাকতে পারব না।’’

নবম শ্রেণির পড়ুয়া এনসিসি ছাত্র মোস্তাক পাইক, সুমন মণ্ডলরা বলে, ‘‘আমরা ছোট হলেও ওদেরকে বোঝাতে পেরেছি, হেলমেট পরার উপকারিতা কতটা। হেলমেট ছাড়া যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে খুব লজ্জিত হয়েছেন। হেলমেট না পরে আর বেরোবেন না বলে কথাও দিয়ে গিয়েছেন।’’

প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতির কথায়, ‘‘হেলমেট পরা নিয়ে অনেকের মধ্যে এখনও অনীহা রয়েছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাই হেলমেট পরার গুরুত্ব বোঝাতে ছাত্রছাত্রীদের পথে নামানো হয়েছিল। তাতে খানিকটা হলেও কাজ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement