পাচার বন্ধে নাটক পড়ুয়াদের

প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিল কাকদ্বীপের নবম শ্রেণির ছাত্রী অমৃতা। কিন্তু বিয়ের পরে স্বামী রাঁচির একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ অবশ্য মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পেরেছে।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৮
Share:

জমে উঠেছে নাটকের মহড়া। —নিজস্ব চিত্র।

প্রেমে পড়ে বিয়ে করেছিল কাকদ্বীপের নবম শ্রেণির ছাত্রী অমৃতা। কিন্তু বিয়ের পরে স্বামী রাঁচির একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ অবশ্য মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পেরেছে।

Advertisement

পুলিশের খাতায় এ রকম ঘটনার সংখ্যা ভুরি ভুরি। সে সবকেই এ বার নাটকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পের আওতায় বয়ঃসন্ধির মেয়েদের পাচারকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে কাকদ্বীপ শিশু শিক্ষায়তনের স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি হয়েছে নাটক ‘অপারেশন অমৃতা’।

নাটকটি লিখেছেন কাকদ্বীপ শিশু শিক্ষায়তনের শিক্ষক দেবদুলাল পাঁজা। নির্দেশনায়, কাকদ্বীপের প্রয়াত কবি সামসুল হকের ছেলে ওথেলো হক। নাটকে দেখানো হয়েছে, গরিব পরিবারের নাবালিকাদের পাত্রপক্ষ সম্পর্কে কোনও খোঁজ না নিয়েই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেবদুলালবাবুর কথায়, ‘‘খুব অল্প সময়ে নাটকটি লেখা হয়েছে। ৩৫ মিনিটের নাটকে ১০টি চরিত্রে স্কুলের খুদেরা অভিনয় করছে।’’ পাচার নিয়ে সচেতন করা ছাড়াও নাটকটিতে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার নিয়ে সচেতন করা হয়েছে। আজ, শনিবার হারউড পয়েন্ট থানা এলাকার ১ নম্বর জেটি এলাকায় সরকারি লজের পাশে থানা সমন্বয় কমিটির অনুষ্ঠানে নাটকটি প্রথমবার মঞ্চস্থ হওয়ার কথা।

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের নিজস্ব প্রকল্প। এর আওতায় সেমিনার-সহ অন্যান্য কর্মসূচি নেওয়া হলেও নাটক হচ্ছে এই প্রথম। নাটকটি রূপায়ণে উৎসাহ দিয়েছেন হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার ওসি সলিল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের খুদেদের মাধ্যমে নাবালিকা পাচারের বিরুদ্ধে বার্তা দিলে সেটি অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়। তাই এই উদ্যোগ।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) চন্দ্রশেখর বর্ধন জানান, ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পের আওতায় এর আগে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার এবং স্লাইড শো হয়েছে। সেখানে পাচার হয়ে ফিরে আসা মহিলারা এসে অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন। চন্দ্রশেখরবাবু বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি স্কুলে ১০ জন করে ছাত্রী এবং দু’জন করে শিক্ষিকা নিয়ে একটি করে স্বয়ংসিদ্ধা দল তৈরি করা হয়েছে। তারাও এই ধরনের নাটক মঞ্চস্থ করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন