এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন বসল না বসিরহাটের স্কুলগুলিতে।
বসিরহাট মহকুমায় স্কুলের সংখ্যা ২৪৮টি। বছরখানেক আগে একবার বারাসতে সর্বশিক্ষা দফতর থেকে মহিলাদের জন্য ভেন্ডিং মেশিন দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। নানা পঞ্চায়েত থেকেও একই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরে আর তা কার্যকর হয়নি বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের একমাত্র মেয়েদের স্কুল রানিবালা গার্লস হাইস্কুল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মিত্র বলেন, ‘‘ভেন্ডিং মেশিন হলে ন্যাপকিন ব্যবহারে ছাত্রীদের অনেক সুবিধা হবে। সর্বশিক্ষা দফতর থেকে আমাদের ডেকে ভেন্ডিং মেশিন দেওয়ার কথা বলা হলেও তা এখনও দেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, বছরে একবার একটি সংস্থা এসে স্কুলে সেমিনারের পাশাপাশি ন্যাপকিন দিয়ে যায়। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক মহিলা কর্মীর কাছে থাকে ওই ন্যাপকিন। সেখান থেকেই ব্যবহার করে ছাত্রীরা।
হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর সৃষ্টিধর ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভেন্ডিং মেশিনের দাবিতে অনেকবার স্বাস্থ্য দফতরের কাছে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি। তবে তাঁদের দেওয়া ন্যাপকিন স্কুলের এক শিক্ষিকার কাছে রাখা থাকে। সেখান থেকেই ছাত্রীরা নিখরচায় ন্যাপকিন নেয়।’’ বসিরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন রায়ের কথায়, ‘‘এখন ভেন্ডিং মেশিনের কার্যকারিতা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওই মেশিন ছাত্রীদের ন্যাপকিন পেতে সুবিধা করে দিয়েছে।’’ নিজের এবং পরিবারের অন্য মহিলাদের জন্যও ন্যাপকিন সংগ্রহ করা যায় ওই মেশিনের সাহায্যে, জানালেন তিনি।
হিঙ্গলগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন ঘোষ জানান, ওই মেশিন থাকলে আড়াই হাজার ছাত্রীর সুবিধা হত। বসিরহাট হরিমোহন দালাল বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলের ক্যান্টিনে ন্যাপকিন রাখা থাকে। সেখান থেকে ৫ টাকার বিনিময়ে ছাত্রীরা তা সংগ্রহ করে।’’ টাকি সৃষ্টিধর লালমাধব উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ভেন্ডিং মেশিন পেলে আমাদের মতো অনেক স্কুলের ছাত্রীরাই উপকৃত হবে।’’
এই এলাকায় একমাত্র স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া গার্লস হাইস্কুল এবং মেদিয়া বাস্তুহারা স্কুলে তৃণমূলের সাংসদ মমতা ঠাকুরের চেষ্টায় ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি বলেন, ‘‘কই আমার কাছে তো এমন মেশিনের কথা কেউ কখনও বলেননি। তবে যখন শুনেছি, তখন এর একটা ব্যবস্থা করা হবে।’’ বিষয়টি সরকারি ভাবে আলোচনার পরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথা বলেন সাংসদ।