মাধ্যমিক দিতে আসেনি ছাত্রী, জানালেন শিক্ষক

নাবালিকা বিয়ে বন্ধের জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্তরে নিরন্তর প্রচার চলছে। খবর পেয়ে অনেকগুলি নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। কিন্তু তাতেও সেভাবে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

জয়নগর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০২:০৬
Share:

কর্মশালা: জয়নগরে নিজস্ব চিত্র।

নাবালিকা বিয়ে বন্ধের জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্তরে নিরন্তর প্রচার চলছে। খবর পেয়ে অনেকগুলি নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। কিন্তু তাতেও সেভাবে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না। সরকারি কর্তা এবং সাধারণ মানুষের আলাপচারিতায় সেই আক্ষেপই উঠে এল বুধবার নারী দিবসের সকালে, জয়নগরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আয়োজিত আলোচনা সভায়।

Advertisement

জয়নগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির হলঘরে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় কয়েকজন সরকারি আধিকারিক ছাড়াও ছিলেন কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মী। সেই আলোচনা সভাতেই জয়নগর-১ ব্লকের চালতা বেড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষক খুশিলাল চক্রবর্তী জানান, সদ্য শেষ হওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাঁদের স্কুলে স্থানীয় সিংহেরদাঁড়ি কেদারনাথ হাইস্কুলের পরীক্ষার্থীদের ‘সিট’ পড়েছিল। শেষ পরীক্ষার দিনে এক জন ছাত্রী পরীক্ষা দিতে আসেনি। খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাবা-মা স্কুলে আসেন। তাঁরা জানান, মেয়ে পরীক্ষা দিতে বেরিয়েছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেই ছাত্রীর খোঁজ এখনও মেলেনি। জয়নগর-১ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা জানান, ওই ছাত্রীর খোঁজ চলছে। তাঁর সহপাঠিনীরা জানান, শেষ পরীক্ষার দিনে ওই ছাত্রীকে তারা স্কুলে দেখেছিলেন। কিন্তু তার পর সে পরীক্ষার হলে আসেনি।

ছাত্রীটির সঙ্গে কী হয়েছে সেই বিষয়ে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা এখনও অন্ধকারে থাকলেও তাঁদের অনুমান, তাকে কোথাও পাচার করা দেওয়া হতে পারে অথবা তার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এর পর আরেক শিক্ষক বলেন, ‘‘আমার পাশের বাড়ির এক কিশোরী নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি কোথায়, কীভাবে জানাবো জানি না।’’ এছাড়াও নাবালিকা বিয়ের বিষয়েও কয়েকটি অভিযোগ উঠে আসে।

Advertisement

আলোচনা সভায় ছিলেন জয়নগর থানায় পুলিশ অফিসার তপন অধিকারী, জয়ন‌গর-১ ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক সুপ্রতিম পাল প্রমুখ। তাঁরা জানান, নারী সুরক্ষা বা়ড়াতে প্রতিটি গ্রাম সংসদ এলাকায় ১২ থেকে ১৮ বছরের খুদেদের দল তৈরি হবে। তাদের কাজ হবে, গ্রামের নারী নির্যাতন হলে পুলিশের কাছে সময় পৌঁছে দেওয়া। তপনবাবু জানান, গ্রামে নাবালিকা বিয়ের খবর পেলেই তাঁরা ব্যবস্থা নেন। জয়ন‌গর-১ ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক সুপ্রতিম পালের ক্ষোভ, ‘‘অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে দিয়ে পরিবারের লোকজন ভাবে দায় মুক্ত হলাম। কিন্তু এটি একেবারই ঠিক নয়।’’ আয়োজক সংস্থার কর্ণধার স্মিতা সেনের কথায়, ‘‘আমাদের সমাজে ছেলে -মেয়েকে আলাদা ভাবে দেখা হয়। এটি বুঝতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন