হাতে-হাতে: চকলেট তুলে দিচ্ছে কচিকাঁচারা। নিজস্ব চিত্র
খুদে হাত এগিয়ে দিচ্ছে চকোলেট, সঙ্গে কচি গলায় অনুরোধ— ‘‘কাকু, আমাদের কথা ভেবে আর বাড়ির কথা ভেবে হেলমেট পরে বাইক চালান।’’
খুদে পড়ুয়াদের এ হেন কথায় লজ্জায় পড়ে যাচ্ছেন হেলমেটহীন বাইক আরোহী। ক্ষমা চেয়ে মুখে তখন তাঁদের একগাল হাসি। কেউ কেউ আবার বাইকের হাতলে ঝোলানো হেলমেট তড়িঘড়ি পরেও নিলেন।
বারুইপুর জেলা পুলিশের নির্দেশে ক্যানিং থানার উদ্যোগে শনিবার ক্যানিংয়ের হেলিকপ্টার মোড়ে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কার্যকর করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ক্যানিংয়ের এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু এবং ওসি আশিস দাসের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে ওই কর্মসূচি পালিত হয়।
মাথায় হেলমেট নেই, এক হাত কানের কাছে মোবাইল ধরে এক হাতেই বাইক চালাচ্ছিলেন এক যুবক। স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে পুলিশকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন। ততক্ষণে চকোলেট নিয়ে এগিয়ে এসেছে ছোট ছোট হাত। খুদেদের থেকে পাওয়া চকোলেট আর উপদেশ পেয়ে অপ্রস্তুত যুবক।
ক্যানিংয়ের বাসিন্দা প্রবীর নাইয়ারও একই রকম অভিজ্ঞতা। বললেন, ‘‘তাড়া থাকলে বা কাছাকাছি কোথাও গেলে হেলমেট পরা হয় না ঠিকই। তবে দূরে কোথাও গেলে অবশ্যই পরি। কিন্তু আজ ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যে ভাবে আমাদের সচেতন করল, তা খুবই ভাল লেগেছে। এ বার থেকে সব সময়ে হেলমেট পরব।’’
পথ দুর্ঘটনায় রোজই এ রাজ্যের কোনও না কোনও প্রান্তে কারও না কারও মৃত্যু ঘটছে। উদ্বিগ্ন পুলিশ-প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীকে পেট্রল পাম্প থেকে তেল দেওয়া হবে না। ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কার্যকর করতে নানা সময়ে আরও বিভিন্ন উদ্যোগ করা হয়েছে। কখনও হেলমেট বিতরণ করেছে পুলিশ। কখনও রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রসগোল্লা খাইয়েছে। কিন্তু তারপরেও অবস্থা মোটের উপর একই রকম। সে জন্যই সচেতনতা বাড়াতে লাগাতার এমন উদ্যোগ করা হবে বলে জানাচ্ছে প্রশাসন।
এসডিপিও বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে সচেতনতার খুবই অভাব। সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কার্যকর করতে নানা ভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। তার পরেও অনেকে বিনা হেলমেটে বাইক চালাচ্ছেন। এ বার তাঁরা যদি অন্তত ছোটদের কথা শোনেন, তা হলেই মঙ্গল।’’