গাড়ির বৈধ কাগজপত্র না থাকাই হোক বা সিটবেল্ট না পরে গাড়ি এবং হেলমেট না পরে মোটরবাইক চালানো— ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এটাই ছিল কার্যত দস্তুর। দিনের পর দিন ধরে চলা এই অনিয়মের শিকড় যে কত গভীরে, ভোটের মুখে পুলিশি নজরদারির কড়াকড়িতে সেই ছবিটা আরও এক বার সামনে এসেছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর, নিয়ম না মানায় আগে যেখানে দিনে গড়ে ১০-১২টি কেস দেওয়া হতো, এখন সেখানেই কেস দেওয়া হচ্ছে দিনে ৩০-৪০টি। পাশাপাশি, গাড়ির বৈধ কাগজ না থাকা এবং হেলমেট না পরে বাইক চালানোর দায়ে গত এক মাসে রেকর্ড সংখ্যক মামলা দায়ের হয়েছে কমিশনারেটে।
পরিবহণ দফতরের হিসেব অনুয়ায়ী, শিল্পাঞ্চলে রোজ চলা গাড়ির সংখ্যা ১০ লক্ষেরও বেশি। এর মধ্যে বহু গাড়িতেই পুলিশ বা প্রেস স্টিকার লাগানো থাকে। ভোটের কাজে বেসরকারি গাড়ি নেওয়া আটকাতে অনেকে ভুয়ো স্টিকারও ব্যবহার করেন। কিন্তু ঢিলেঢালা নজরদারির সুযোগে এত দিন প্রেস স্টিকার সেঁটে পুলিশের চোখের সামনে দিয়েই যাতায়াত করত ওই সব গাড়ি এবং বাইক। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার জানান, এ বার থেকে সেগুলির কাগজও পরীক্ষা করা হবে। কারণ, পুলিশের মতে, যে সংবাদমাধ্যমের গাড়ি, তার নাম বা লোগো না থাকায় শুধু প্রেস স্টিকারের আড়ালে দুষ্কৃতী-রাজ বাড়ছিল শিল্পাঞ্চলে। অনেক প্রোমোটারও প্রেস বা পুলিশ স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এখন হেলমেট না পরে বাইক চালালে রেহাই পাবেন না পুলিশকর্মীরাও। পুলিশ স্টিকার লাগানো গাড়িতেও সিট বেল্টের ব্যবহার না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নজরদারিতে কড়াকড়ি দেখা গিয়েছে নির্বাচনী প্রচারে বেরোনো প্রার্থীর গাড়ির ক্ষেত্রেও। এ দিন জগদ্দলের পাওয়ার হাউস মোড়ে নাকা চলার সময়ে সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী, বিদায়ী বিধায়ক পরশ দত্তর গাড়ি আটকে তল্লাশি করে পুলিশ।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘রাস্তা-ঘাটে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলে দুষ্কৃতীদের অবাধ গতিবিধিতে লাগাম টানা যাবে।’’