প্রতীকী ছবি।
বজবজের গৃহবধূ জয়ন্তী পাঁজা আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
রবিবার সন্ধ্যায় বজবজ থানার চড়িয়ালের বিদ্যাসাগর রোডের বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর (৩৬) দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। নিজের
ঘরে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে দেহটি ঝুলতে দেখা যায়। মৃতার বাবা রবীনচন্দ্র ডালের অভিযোগের ভিত্তিতে জয়ন্তীর স্বামী বুদ্ধদেব পাঁজা এবং ভাসুরের ছেলে সোনুকে সোমবারই গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০১৬ সালের একবালপুর লেনের জয়ন্তীর সঙ্গে পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মধ্য চল্লিশের বুদ্ধদেববাবুর বিয়ে হয়েছিল।
বাপের বাড়ি একবালপুর এলাকায় শিক্ষিকা হিসাবে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন জয়ন্তী। সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাপের বাড়িতে থেকে ছাত্র পড়াতেন তিনি। এই ঘটনায় বিস্মিত একবালপুরে জয়ন্তীদের প্রতিবেশী এবং ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের মতে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জয়ন্তীর লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জেদ ছিল প্রবল।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার পরিজনেদের অভিযোগ, জয়ন্তীকে খুন করে ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। জয়ন্তীর শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। যদিও পুলিশকর্তাদের কথায়, মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ওড়নার ফাঁসের জেরেই শ্বাসরোধ করে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের। বিছানার উপরে একটি চেয়ার রেখে সেখানে উঠে ফাঁস লাগিয়েছেন জয়ন্তী, এমনটাই দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
এক তদন্তকারী জানান, বিছানা থেকে ওই গৃহবধূর সুইসাইড নোটও মিলেছে। তাঁর মৃত্যুর জন্যও কাউকে দায়ী করেননি জয়ন্তী। যদিও দিদি বাসন্তীর দাবি, ‘‘ওই সুইসাইড নোট আমার বোনকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’ মৃতার বাবা রবীনবাবুর অভিযোগ, ‘‘শ্বশুরবাড়িতে মেয়ের চেহারা নিয়ে নানা কটূক্তি শুনতে হত। দীর্ঘ দিন ধরে এ সব শুনতে শুনতে অবসাদে ভুগছিল আমার মেয়েটা।’’
তদন্তে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবারই স্বামীর সঙ্গে পুরী থেকে ফিরেছিলেন জয়ন্তী। তদন্তকারীদের দাবি, ইতিমধ্যেই গৃহবধূকে কটূক্তি করার বিষয়ে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে ধৃত দু’জনকে। যদিও জেরায় তাঁরা এখনও কিছু কবুল করেননি বলে দাবি তদন্তকারীদের।