বকখালিতে এখনও বসল না টাওয়ার

গত বছর সঠিক সময় যোগাযোগের অভাবে সমুদ্র ঝড় এড়াতে পারেননি মৎস্যজীবীরা। গভীর সমুদ্রে থাকাকালীনই ঝড়ের দাপটে ৮ জন মারা গিয়েছেন।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০২:০৩
Share:

গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া শুরু হয়ে গেল। কিন্তু মস্যজীবীদের দেওয়া রাজ্য সরকারের আশ্বাস পূরণ হল না।

Advertisement

গত বছর সঠিক সময় যোগাযোগের অভাবে সমুদ্র ঝড় এড়াতে পারেননি মৎস্যজীবীরা। গভীর সমুদ্রে থাকাকালীনই ঝড়ের দাপটে ৮ জন মারা গিয়েছেন। তখন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২০ জন। সে সময় বকখালিতে একটি শক্তিশালী টেলি যোগাযোগের টাওয়ার বসানোর কথা ছিল। একই সঙ্গে বকখালিতেই উপকূলরক্ষীবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী জলযানও রাখার কথা ছিল। কিন্তু কোনওটিই হয়নি।

মৎস্যকর্তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠকে একাধিকবার এই সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাঁরা আপাতত বকখালিতে এরকম কোনও টাওয়ারের অনুমোদন দিচ্ছেন না।

Advertisement

ডেপুটি মৎস্য দফতরের এক কর্তা জানান, টাওয়ার এবং এ পারে উদ্ধারকারী জলযান রাখার ব্যাপারে বারবার কথা হয়েছে। কিন্তু সেরকম উৎসাহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি দেখাচ্ছে না। তবে তাঁদের তরফে মৎস্যজীবীদের লাইফ জ্যাকেট এবং বীমা ছাড়া কোনও নৌকোর অনুমোদন পুণর্নবিকরণ করা হচ্ছে না।

তবে আবহাওয়া খারাপের খবর দ্রুত পৌঁছতে এ বার প্রচুর নৌকোর মাঝিদের নম্বরও নিয়ে রেখেছে মৎস্য দফতর।

জেলাশাসকের নেতৃত্বে মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিয়ে একটি সমম্বয় কমিটি তৈরি হয়েছিল। মাছের মরশুম শুরুর আগে এবং বছরে অন্তত কয়েকটি বৈঠক হতো। কিন্তু প্রায় তিন বছর হল সেই কমিটির আর কোনও বৈঠক হয় না। সেই বৈঠকেই এ সব নিয়ে আলোচনা এবং দ্রুত সমাধানের সুযোগ থাকত। গত বছর দুর্ঘটনার পর এই সব বিষয়গুলি মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরাকেও বলেছিলেন মৎস্যজীবীরা।

যদিও সেই কমিটিকে চাঙ্গা করে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। মন্টুবাবুর কথায়, ‘‘আমি কথা বলব জেলাশাসকের সঙ্গে, যাতে এ বছর থেকে ওই বৈঠকটি ফের চালু করা হয়।’’

মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির নেতা বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্ররা বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার সময় প্রতিবছরই মৎস্যজীবীদের নৌকোই পাঠাতে হয়। অথচ সাম্প্রতিক ঝড়ের সময় বাংলাদেশে ত্রাণ পাঠানো, মৎস্যজীবীদের উদ্ধার সবই করছে আমাদের নৌ বাহিনী। আমাদের রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দল কোনও কাজেই লাগে না।’’

মৎস্যজীবীদের দাবি, উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে হলদিয়া থেকে একটি জলযান দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাখলে উদ্ধার কাজে সুবিধা হয়। দু’বছর হল ফ্রেজারগঞ্জে উপকূলরক্ষী বাহিনীর অফিসও তৈরি হয়েছে। কিন্তু উদ্ধারকারী জলযান আসেনি।

মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা মৎস্যজীবীদের মধ্যে লাইফ জ্যাকেট পরা এবং বিপদ সঙ্কেত যন্ত্র যথাযথ ভাবে ব্যবহার করার সচেতনতা তৈরি করেছেন।

দুর্ঘটনায় পড়লে বিপদ সঙ্কেত যন্ত্রের মাধ্যমেই উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে খবর যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন