ভেঙে ঘাড়ে পড়বে না তো, আতঙ্ক

মাথায় উপরে ঝুলছে বোর্ড। ঘরঘর আওয়াজ করে দেওয়ালে ঘুরছে ভাঙাচোরা কয়েকটি পাখা। তার মধ্যেই চলছে অনুষ্ঠান।

Advertisement

নির্মল বসু

বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৪
Share:

ভাঙাচোরা: নিজস্ব চিত্র

মাথায় উপরে ঝুলছে বোর্ড। ঘরঘর আওয়াজ করে দেওয়ালে ঘুরছে ভাঙাচোরা কয়েকটি পাখা। তার মধ্যেই চলছে অনুষ্ঠান।

Advertisement

বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া এলাকাটি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। বাদুড়িয়া থেকেই উঠে এসেছেন মলিনা দেবী, বিশ্বনাথ বসু, মেঘনাদ ভট্টাচার্যের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। একাধিক নাট্যগোষ্ঠী ও সাংস্কৃতিক সংস্থার উদ্যোগে সারা বছর ধরে নানা অনুষ্ঠান হতো বাদুড়িয়া পুরসভা পরিচালিত ওই প্রেক্ষাগৃহে। কিন্তু সে সব এখন অতীত। একান্ত প্রয়োজন না হলে নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই প্রেক্ষাগৃহে কেউ অনুষ্ঠান করেন না। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভেঙে পড়েছে প্রেক্ষাগৃহের পরিকাঠামো। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নজরদারির অভাবেই প্রেক্ষাগৃহটির এই অবস্থা।

স্থানীয় ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৬ সালে ওই প্রেক্ষাগৃহটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। শেষ হয় ১৯৯১ সালে। খরচ হয়েছিল কমবেশি ১১ লক্ষ টাকা। ৬৪৫টি আসনের ওই প্রেক্ষাগৃহটির শেষ সংস্কার হয়েছিল ২০০০ সালে। সেই শেষ। এখন মাঝে মধ্যেই ছাদ থেকে বোর্ড খুলে যায়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা কমল পাল, রত্না ভৌমিক, খালেদ মণ্ডলদের ক্ষোভ, ‘‘ওই প্রেক্ষাগৃহে বসে অনুষ্ঠান দেখতে ভয় লাগে। পরিবারের কোনও সদস্যের ওখানে অনুষ্ঠান থাকলেও চিন্তায় থাকি।’’

যদিও বছর কয়েক আগেও অবস্থা এমন ছিল না। প্রায় প্রতি সপ্তাহে ওই মঞ্চে নাটক-যাত্রা হতো। দ্বান্দ্বিক, শিল্পীগোষ্ঠী, নবরত্ন, প্রয়াসী, যাত্রাগোষ্ঠী, চৈতালি নাট্য সংস্থা, শ্রী গৌরাঙ্গ নাট্য সমাজ, মহামায়া অপেরার মতো দলগুলি নাটক ও যাত্রা করত। বাদুড়িয়ার কচি-কাঞ্চন সব পেয়েছির নাট্য দলের সভাপতি অনিমেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে বাদুড়িয়ায় প্রচুর নাটক, যাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহটির এই দশা হওয়ায় সেখানে অনুষ্ঠান করা যায় না। অস্থায়ী মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ব্যয়সাপেক্ষ। তাই এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কার্যত বন্ধ হতে বসেছে।’’

২০১১ সালে পুরসভার উদ্যোগে ১১০০টি আসনের কমিউনিটি হল-সহ একটি তিনতলা ভবনের শিলান্যাস করা হয়েছিল বাদুড়িয়ায়। কিন্তু সেই প্রকল্প দিনের আলো দেখেনি।

তবে আশ্বাস দিয়েছেন বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান তুষার সিংহ। তাঁর দাবি, ‘‘সম্প্রতি জেলার মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওই প্রেক্ষাগৃহে একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনি সব দেখে প্রেক্ষাগৃহটি সংস্কারের জন্য সাংসদ তহবিল থেকে টাকার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা ইতিমধ্যেই আধুনিক মঞ্চের নকশা করতে দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন