বাস-ট্রেকার সংঘর্ষে মৃত্যু তিন জনের

এ দিন দুপুরে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল একটি বেসরকারি বাস। সেই সময় বারাসতের দিক থেকে আসা যাত্রী বোঝাই একটি ট্রেকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটির সামনে চলে আসে। সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যায় ট্রেকারটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ০১:২৬
Share:

বিপর্যয়: উল্টে পড়েছে ট্রেকার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

বাস ও ট্রেকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক দম্পতি-সহ তিন জনের। আহত আরও সাত। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোমবার দুপুরে, বারাসতের কাজিপাড়ার শিমুলতলা এলাকায় টাকি রোডের ঘটনা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কমল বিশ্বাস (৪৮) ও মঙ্গলা বিশ্বাস (৪২) নামে এক দম্পতির। তাঁদের বাড়ি দেগঙ্গার কার্তিকপুরে। ফয়জল খান (২০) নামে এন্টালির বাসিন্দা এক যুবক পরে বারাসত হাসপাতালে মারা যান। বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। এ দিন ক্ষিপ্ত জনতা বেআইনি ট্রেকারটিকে রাস্তার ধারে নয়ানজুলিতে ঠেলে ফেলে দেয়। দুর্ঘটনার জন্য টাকি রোডের বেহাল দশা ও ট্র্যাফিকের অব্যবস্থা নিয়েও ক্ষোভ জানান এলাকার মানুষ।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, এমনিতেই বারাসত-টাকি রোডের অনেকটা অংশ বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও আবার সংস্কারের কাজ চলছে। এ দিন দুপুরে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল একটি বেসরকারি বাস। সেই সময় বারাসতের দিক থেকে আসা যাত্রী বোঝাই একটি ট্রেকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটির সামনে চলে আসে। সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যায় ট্রেকারটি। এর পরেই স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ মিলে কোনওক্রমে ট্রেকারে আটকে থাকা যাত্রীদের বার করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মারা যান ফয়জল। আহতদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছে বলে এ দিন জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল।

Advertisement

এই ঘটনায় বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে ওই রাস্তায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় ভাঙা কাচ, রক্ত পড়ে রয়েছে। পাশের নয়ানজুলিতে পড়ে রয়েছে দুমড়ে যাওয়া ট্রেকারটি। রাজু গোলদার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘দুর্ঘটনায় ট্রেকারটি দলা পাকিয়ে যায়। ভিতরে আটকে পড়েন ১২ জন। রড ঢুকে মৃত্যু হয় ওই দম্পতির।’’ কমলবাবুর ছেলে প্রবীর বিশ্বাস এ দিন বলেন, ‘‘রবিবার মা পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পান। এ দিন মাকে চিকিৎসা করাতে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা। ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে।’’

এ দিন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, ২ বছর ধরে বারাসত-টাকি রোড সম্প্রসারণের নামে প্রহসন চলছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বারাসত থেকে বেড়াচাঁপা পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার রাস্তার। গোলাবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ কিছুটা হলেও বাকি কাজ শুরুই হয়নি। ফলে বৃষ্টির জলে ভরা খানাখন্দগুলি বুঝতে না পেরে প্রায়শ ঘটছে দুর্ঘটনা। ওই রাস্তার পাশে স্কুলগুলিতেও প্রতিদিন পড়ুয়ারা বিপদ মাথায় নিয়ে যাতায়াত করে, কিন্তু পুলিশের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ।

পাশাপাশি বেআইনি ট্রেকার বন্ধ করার আর্জিও জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আব্দুল লতিফ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘নড়বড়ে ট্রেকারগুলি এই রাস্তায় চলাচলের যোগ্য নয়। তা সত্ত্বেও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চলছে।’’ কিছুদিন আগেও দেগঙ্গা থানার সামনে ট্রেকার দুর্ঘটনায় জখম হন ৫ জন। তার পরেও বন্ধ হয়নি এই গাড়ি। উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ জানিয়েছে, বেআইনি ট্রেকার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন