কাকদ্বীপের ৩ নার্সিংহোমকে বন্ধের নোটিস

শিশু চুরির অভিযোগকে ঘিরে কয়েক মাস আগে শোরগোল পড়েছিল রাজ্য জুড়ে। তার পরেই শুরু হয়েছিল নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে অভিযান। অভিযান হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও। তখন বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমকে তাদের পরিকাঠামো-সহ সমস্ত নথিপত্র ঠিক করে নিতে বলা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

শিশু চুরির অভিযোগকে ঘিরে কয়েক মাস আগে শোরগোল পড়েছিল রাজ্য জুড়ে। তার পরেই শুরু হয়েছিল নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে অভিযান। অভিযান হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও। তখন বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমকে তাদের পরিকাঠামো-সহ সমস্ত নথিপত্র ঠিক করে নিতে বলা হয়েছিল।

Advertisement

কাকদ্বীপ মহকুমার তিনটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ মতো কাজ করেনি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। সে জন্য ওই তিনটি নার্সিংহোম বন্ধের নোটিস পাঠাল সংশ্লিষ্ট দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম মালাকার জানান, কাকদ্বীপের সেবা ভবন, কাকদ্বীপ মেটারনিটি ও পাথরপ্রতিমার মাদার নার্সিংহোমগুলির মালিকদের শুক্রবারই নোটিস পাঠিয়ে বলা হয়েছে, তাঁরা যেন আর নার্সিংহোম না চালান। তাঁর কথায়, ‘‘পরিকাঠামো ও লাইসেন্স নিয়ে সমস্যা আছে বলেই নোটিস দেওয়া হয়েছে ওই নার্সিংহোমগুলিকে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ মহকুমার চারটি ব্লকে ২২টি নার্সিংহোমকে তাদের পরিকাঠামো-সহ সমস্ত নথি ঠিক করে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের নতুন স্বাস্থ্য আইন মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য মে মাসের শুরুতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য কমিটির বৈঠক হয় আলিপুরে। জানা গিয়েছে, সেখানে জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করার কথা। দল গঠন করে ফের অভিযান চালানো হবে। যদি দেখা যায়, পর পর দু’বার অভিযানে যে সমস্ত নার্সিংহোম ও ক্লিনিকগুলির পরিকাঠামো ও নথি ঠিক নেই তা হলে সেগুলির লাইসেন্স বাতিল করার পথেই হাঁটবে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

কী বলছে নোটিস পাওয়া নার্সিংহোমগুলি?

জানা গিয়েছে, সেবা ভবন নার্সিংহোমের লাইসেন্স পুনর্নর্বিকরণ করা হয়নি। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাতেও সমস্যা রয়েছে। নার্সিংহোমের কর্তা অমিত দাস জানিয়েছেন, সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে আবার চালু করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘শুক্রবারই নোটিস পেয়েছি। রোগীদের ছুটি দিতে দু’তিন দিন সময় লাগবে। আপাতত রোগী ভর্তি বন্ধ রাখছি। সোমবার থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’

মেটারনিটি নার্সিংহোম চলছে ভাড়া বাড়িতে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই মামলা চলছে বাড়ি মালিকের। আদালতের নির্দেশে ছাড়পত্র পেয়ে চালানো হচ্ছে নার্সিংহোমটি। কেন পরিকাঠামো ও নথিপত্রগুলি ঠিক করা হয়নি? মালিক জ্ঞানরঞ্জন হালদারের দাবি, আদালতের ছাড়পত্র রয়েছে, ওই বাড়িতে নার্সিংহোমটি চালানোর জন্য। তাঁরা লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সমস্ত নথি বৃহস্পতিবারই জমা করেছি। তার পরেও কেন নোটিস দেওয়া হল বুঝতে পারছি না।’’

যদিও স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নার্সিংহোমটি চলছে সেই বাড়ির মালিক স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নার্সিংহোমটি সরানোর আর্জি জানিয়েছেন। তাই মামলায় হেরে গেলে কোনও গুরুতর রোগী থাকলে তাঁকে সরিয়ে বাড়ির দখল নেওয়া ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি ওই নার্সিংহোমটিকে। এ ছাড়াও নথিপত্র সংক্রান্ত গোলমালও আছে বলে জানান স্বাস্থ্য কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন