বিসর্জনের উৎসবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বজবজে

বিসর্জনের উৎসবে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে উত্তপ্ত হল বজবজ থানার বালুরঘাট এলাকা। রবিবার রাতের এই ঘটনায় বজবজ পুরসভার এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের হল পুলিশের কাছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিসর্জনের উৎসবে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে উত্তপ্ত হল বজবজ থানার বালুরঘাট এলাকা। রবিবার রাতের এই ঘটনায় বজবজ পুরসভার এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের হল পুলিশের কাছে।

Advertisement

বজবজ বালুরঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে পুলিশের তরফে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই রাতে সাড়ে আটটা নাগাদ মঞ্চে আসেন বজবজ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্ত। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মঞ্চ থেকে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা গৌতমবাবু, স্থানীয় বিধায়ক অশোক দেব ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, আচমকা মঞ্চে উঠে আসেন হারান গিরি ও নীতিন গিরি নামে দুই তৃণমূল সমর্থক। অভিযোগ, ঘোষকের হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে বিধায়ক অশোক দেব ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করতে থাকেন তাঁরা। কিন্তু মঞ্চে বসে থাকা গৌতমবাবুর নাম উচ্চারণ করেননি ওই দুই তৃণমূল সমর্থক। তার পরেই ওই দুই তৃণমূল সমর্থকের সঙ্গে গৌতমবাবুর অনুগামীদের বচসা হয়। মঞ্চ থেকে উঠে চলে যান গৌতমবাবু। পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। তার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে বলেই দাবি করছেন পুলিশকর্তারা।

অভিযোগ, এর কিছু পরেই ওই মঞ্চের কাছে হাজির হন বজবজ পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিঠুন ঠিকাদার। মঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে একটি ক্লাবের কয়েক জন সদস্যের উপরে মিঠুন-সহ তাঁর দলবল হামলা চালান বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, মিঠুনের সঙ্গীদের মারে গুরুতর জখম হন রাজীব দাস নামে এক যুবক। তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই মিঠুনবাবুর বিরুদ্ধে বজবজ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই ফেরার মিঠুন। তবে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠীর বচসার ঘটনা শোনার পরেই আমি ও কয়েক জন সঙ্গী ওখানে গিয়েছিলাম। ওই ক্লাবের কয়েক জন সদস্য আমাদের উপরে লোহার রড নিয়ে হামলার চেষ্টা করে। তার পরেই আমার সঙ্গে থাকা কয়েক জন ছেলে আত্মরক্ষার জন্য ওদের রড কেড়ে নিয়ে পাল্টা মারধর করে। ওই মারে চোটেই এক যুবক জখম হয়েছে বলে শুনেছি।’’

Advertisement

স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে খবর, বজবজ ব্লক তৃণমূলের শ্রীমন্ত বৈদ্যর অনুগামীরাই গৌতমবাবুর অনুগামীদের মারধর করে বলে অভিযোগ। হারান ও নীতিন খুনের অভিযুক্ত সম্প্রতি এলাকায় ফিরে এসেছে। দু’জনই এখন শ্রীমন্ত বৈদ্যর অনুগামী। ওই দু’জনই এলাকায় ফেরার পরে নানা সময়ে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ বজবজ তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের। তবে শ্রীমন্তবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি এসএমএসেরও জবাব দেননি। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের উস্কানি দিয়ে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। দলের উচ্চস্তরে তা জানাব।’’ জেলা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল অবশ্য দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘ওখানে হয়তো কোনও ব্যক্তিগত স্তরে বিরোধ রয়েছে। আমরা তা সাংগঠনিক ভাবে তদন্ত করে দেখব।’’

ডায়মন্ড হারবার জেলার পুলিশ সুপার সেলভা মরুগাম বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে অভিযুক্তেরা সকলেই পলাতক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন