অপসারিত প্রধান, প্রকট শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল

তৃণমূলের আনা অনাস্থা ভোটে অপসারিত হলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত প্রধান। সোমবার দুপুরে বাসন্তী পঞ্চায়েতের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়। ভোটাভুটিতে হেরেছেন প্রধান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০০:২৮
Share:

ভোটাভুটি শেষে বেরোচ্ছেন সদস্যেরা। ছবি: সামসুল হুদা।

তৃণমূলের আনা অনাস্থা ভোটে অপসারিত হলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত প্রধান।

Advertisement

সোমবার দুপুরে বাসন্তী পঞ্চায়েতের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়। ভোটাভুটিতে হেরেছেন প্রধান।

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গত পঞ্চায়েত ভোটে বাসন্তী পঞ্চায়েতের ২২ জন সদস্যের মধ্যে ২০ জন সদস্য ছিলেন তৃণমূলের, ১ জন আরএসপির, ১ জন পিডিসিআইয়ের। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে পঞ্চায়েত গঠন করে তৃণমূল। সর্ব সম্মতিক্রমে প্রধান হন শ্রীদাম মণ্ডল। পররর্তী সময়ে পিডিসিআইয়ের সদস্য মেহের আলি তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১।

Advertisement

পরে ওই পঞ্চায়েতের ২১ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন প্রধানের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। ২৩ মে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই মতো সোমবার ছিল ভোটাভুটি।

এলাকায় উত্তেজনা থাকায় রবিবার রাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। সোমবার দুপুরে তৃণমূলের ২১ জন সদস্যের মধ্যে ২০ জন সদস্য অনাস্থা ভোটে উপস্থিত ছিলেন। যাঁদের মধ্যে ১১ জন প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেন। ৮ জন ভোট দেন পক্ষে। ১ জন ভোটাভুটিতে বিরত ছিলেন। শ্রীদাম বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। আসলে এ বার বিধানসভা ভোটে গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর তাঁর ভাইকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন। আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। সেই থেকে জয়ন্তবাবু ও তাঁর অনুগামীরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে উঠেপড়ে লাগেন।’’ তাঁর দাবি, অসুস্থ থাকায় তিনি ছুটিতে ছিলেন। অথচ সেই পরিস্থিতিতে অন্যায় ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে। এ জন্য তিনি কোনও নোটিস পাননি বলেও দাবি শ্রীদামবাবুর।

তাঁর আরও অভিযোগ, ভোটাভুটির সময়ে তাঁর সমর্থক সদস্যদের হাত থেকে ব্যালট কেড়ে নিয়ে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজন ভোট দিয়ে দেয়। গোটাটাই সরকারি আধিকারিকদের সামনে হয়েছে।

বাসন্তী ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক মন্টু গাজি অবশ্য অপসারিত প্রধানের যুক্তি অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এলাকায় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন উনি। এলাকার কোনও উন্নয়নমূলক কাজ না করে স্বজনপোষণ করছিলেন। দল বিরোধী কাজও করছিলেন।’’ তাঁর দাবি, শ্রীদামবাবুর কাজে তিতিবিরক্ত ছিলেন পঞ্চায়েতের অন্য সদস্যেরা। সে কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন পঞ্চায়েতের অন্য সদস্যেরা।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানেননি জয়ন্তবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘দল যাকে প্রার্থী করবে, সে-ই প্রার্থী হবে। এ নিয়ে শ্রীদাম বিরোধিতা করার কে!’’ শ্রীদাম ভোটে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার বদলে বিরোধীদের হাত শক্ত করতে চেয়েছিলেন বলেও তাঁর অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন