মথুরাপুরে গুলিতে হত তৃণমূল কর্মী

এক তৃণমূল কর্মীকে মাথায় গুলি করে খুনের ঘটনায় সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আনল শাসক দল। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার দক্ষিণ কালিকাপুর এলাকায়। এ দিন সকালে সরওয়ার মোল্লা (৪৩) নামে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মথুরাপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৯
Share:

এখানেই খুন করা হয় সরওয়ারকে। ছবি: দিলীপ নস্কর

এক তৃণমূল কর্মীকে মাথায় গুলি করে খুনের ঘটনায় সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আনল শাসক দল।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার দক্ষিণ কালিকাপুর এলাকায়। এ দিন সকালে সরওয়ার মোল্লা (৪৩) নামে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়। দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় পর পর গুলি করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় সম্প্রতি একটি ঢালাইয়ের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঠিকারদারদের কাছ নগদ টাকা চাওয়া হয়েছিল। ওই টাকার ভাগ নিয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েক বার গোলমাল হয়। ওই রাস্তা তৈরির কাজের দেখাশোনা করছিলেন এলাকার তৃণমূল কর্মী সরওয়ার মোল্লা। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ভাই মনিরুল মোল্লা সঙ্গে সারবার চায়ের দোকানের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সরওয়ারের মাথার পিছনে ও কপালে গুলি লাগে। তাঁকে প্রথমে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সুপারিশ করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে যাওয়ার পথে সরওয়ারের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন জেলা পুলিশের কর্তারা।
তবে এই ঘটনায় সিপিএমের স্থানীয় নেতা রহিসউদ্দিন মোল্লা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন মন্দিরবাজারের বিধায়ক জয়দেব হালদার। তিনি বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। সিপিএমই উন্নয়ন রুখতে চক্রান্ত করে সরওয়ারকে খুন করেছে।’’ ঘটনার পর সারবারের ভাই মনিরুল কয়েক জন সিপিএম নেতা সহ মোট ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ওই ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক দিন আগেই ওই এলাকায় সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক বরাদ্দে ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল। কয়েক মাস পরই লোকসভা নির্বাচন। সেই কারণে সম্প্রতি ওই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। পর্ষদের তরফে ১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য ৪৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের দুটি গোষ্ঠী ঠিকাদারকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ঠিকাদারের কাছে থেকে টাকা নেওয়া টাকার বখরা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলাও হয়। পরে দিন সকালেই এই খুনের ঘটনা। তবে বিধায়ক জয়দেব হালদার অবশ্য ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকায় সিপিএমের প্রভাব রয়েছে। ওরাই কাজ বন্ধ করার জন্য নানা চক্রান্ত করছে।’’ সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,‘‘মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ হয়েছে। এক গোষ্ঠীর কর্মীকে চপার দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাঁর অবস্থাও গুরুতর। নিজেদের গোষ্ঠী সংঘর্ষ আড়াল করতে সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করবে বলে আমি আশাবাদী।’’ সুন্দরবন জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ওই ঠিকাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন