এসপার পাইক
এক ব্যক্তিকে গুলি করে, কুপিয়ে খুনের অভিযোগে প্রতিবেশী ৭ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে পারুলিয়া কোস্টালের হরিদেবপুর গ্রামের শেখ পাড়া থেকে তাদের ধরা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম এসপার পাইক (৪৫)। তাঁর বাড়ি ওই গ্রামের ফকিরপাড়ায়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) চন্দ্রনাথ বর্ধন বলেন, ‘‘পুরনো বিবাদের জেরে খুনের ঘটনা ঘটেছে। একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ শুক্রবার তাদের ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মা জারিনা বেওয়া। শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। এসপার এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত। মৃতের স্ত্রী ফিরোজা বিবি ও ভাই ইব্রাহিম পাইকের দাবি, যারা এসপারকে মেরেছে তারা প্রত্যেকে সিপিএম সমর্থক। এসপার তৃণমূল করায় তা মেনে পারছিল না তারা। সে কারণেই তাঁকে খুন করা হল। ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি অরুময় গায়েন বলেন, ‘‘এসপারের হাত ধরে এ বার বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বেড়েছিল। তা সহ্য হয়নি সিপিএমের। অভিযুক্তরা সকলেই সিপিএম কর্মী।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের এক নেতা জানান, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন বিকেলে সাড়ে ৪টা নাগাদ বাড়ি থেকে মোটরবাইক করে বেরিয়েছিলেন এসপার। মাথুর মোড়ে আড্ডা মেরে রাত ১০টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সে সময় রামনগরের সরিষা-রায়চক রোডের কুশবেড়িয়া মোড়ের কাছে বাইক দাঁড় করায় দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানায়, এরপরেই তাঁকে ৪টি গুলি করে চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। তাঁর মাথায় ও বুকে গুলি লেগেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা দেহ পড়ে থাকতে দেখে রাতেই রামনগর থানায় খবর দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে শেখ পাড়ায় একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন বোমাবাজি হয়। তাতে কয়েকজন জখমও হন। ওই ঘটনায় ফকিরপাড়ার বাসিন্দা এসপারবাবু-সহ অনেকের নাম জড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ঘটনার বদলা নিতেই খুন করা হল এসপারকে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।