মোস্তাফা আলি
হাত-পা বেঁধে ফেলে দেওয়া হয়েছিল পুকুরে। মাছ ধরার জালে জড়িয়ে দেহ তোলার পরে দেখা গেল, পায়ে থান ইট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
নৃশংস খুনের ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মোস্তাফা আলি (৩২)। তাঁকে দলের কর্মী বলে দাবি করে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে মোস্তাফাকে।’’ সিপিএম-বিজেপির যোগসাজশেই এই খুন বলে অভিযোগ করেছেন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুল ইসলাম। বিরোধীরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতা কুতুবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন।’’
রাজনৈতিক খুনোখুনির ঘটনায় বার বারই আমডাঙার নাম জড়িয়েছে। পঞ্চায়েতে ভোটের মনোনয়ন থেকে গনণার দিনও রক্তারক্তি হয় এলাকায়। বোর্ড গঠন ঘিরেও শাসকদল ও বিরোধীদের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল ৪ জনের। প্রচুর বোমা উদ্ধার হয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় মরিচা, তারাবেড়িয়া ও বোদাই গ্রাম পঞ্চায়েতে এখনও বোর্ড গঠন করা যায়নি।
বোর্ড গঠনের আগের রাতে খুনের ঘটনায় অজমেঢ়শরিফ থেকে ধরা পড়েন সিপিএম নেতা জাকির বুল্লুক। তারপর কিছু দিন সব চুপচাপ ছিল। মোস্তাফার মৃত্যুতে এলাকা ফের অশান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। টহল শুরু হয়েছে গ্রামে।
বড়গাছিয়ার বাসিন্দা মোস্তাফা চাষবাস করতেন। শনিবার দুপুরে মোবাইলে একটি ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। রাতে ফেরেননি। পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার আমডাঙা থানায় ডায়েরি করা হয়। সোমবার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে মাধবপুর আটঘরার একটি পুকুরে মাছ ধরার জালে জড়িয়ে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। দেহে আঘাতের চিহ্ন আছে বলে জানিয়েছেন পাড়া-পড়শিরা। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
এ দিন মোস্তাফার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ন’বছরের মেয়ে ও সাত বছরের ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী সালমা। পাশে মোস্তাফার বাবা আজেত আলি ও মা ফতেমা বিবি বসেছিলেন। সালমা বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে।’’