মৃত সুধীর দাস।
সামান্য টাকার জন্য সে এক বৃদ্ধাকে খুন করেছিল বলে অভিযোগ। সেই খুনের মামলায় কিছু দিন জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়াও পায়। ওই মামলার খরচ চালানোর জন্যই কারখানায় চুরি করতে ঢুকেছিল সুরজিৎ পাত্র ওরফে সুরো। কিন্তু বাধা পেতেই সে খুন করে মধ্যমগ্রামের তৃণমূল নেতা সুধীর দাসকে। ওই খুনের তদন্তে নেমে সুরোকে গ্রেফতারের পরে জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বলেন, ‘‘মামলার খরচ জোটাতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জেরায় জানিয়েছে সুরো।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বছর তিরিশের ওই যুবক সামান্য টাকার জন্যও খুন করতে পিছপা হয় না। বছর দু’য়েক আগে শাসনের এক বৃদ্ধাকে মাত্র ৮০০ টাকার জন্য খুন করেছিল সে। পুলিশের দাবি, জেরায় সুরো জানিয়েছে, বারাসত আদালতে চলা ওই খুনের মামলার খরচ বাবদ তার ২৫ হাজার টাকা দরকার ছিল। সেই জন্যই সে মধ্যমগ্রামের বাদুর ওই কারখানায় চুরি করতে ঢোকে। কিন্তু তা দেখে ফেলায় সুধীরবাবুকে খুন করে দেয় সে।
সুধীরবাবুর পকেটে ছিল মাত্র ২৩০ টাকা। সেই টাকাও হস্তগত করে সুরো। ওই খুনে প্রথমেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল শিবপদ সরকার নামে ৮০ বছরের নিরাপত্তারক্ষীকে। তদন্তে জানা যায়, খুনের পরে সুধীরবাবুকে সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে ফেলে ট্যাঙ্কের মুখ সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ওই কাজে সুরোকে সাহায্য করেছেন বলে স্বীকার করেছেন সেই বৃদ্ধ।
তবে পুলিশকে ধোঁকা দিতে অনেক কৌশল নিলেও শেষরক্ষা হয়নি। গত ২৯ জুলাই গোটা মুখ কাপড়ে ঢেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে কারখানার গেট দিয়ে ঢুকেছিল সুরো। খুনের তদন্তে নেমে কারখানার সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে মধ্যমগ্রাম-সহ আশপাশের এলাকার পা-ভাঙা দুষ্কৃতীদের আটক করে পুলিশ।
পরে খুনের সময়ের আগে ও পরে রাস্তার অন্য সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কারখানায় যে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, তা জানত সুরো। তাই প্রথমে ঠিকঠাক হেঁটে কারখানার সামনে এসে তার পরে মুখে কাপড় বেঁধে খোঁড়ানোর অভিনয় করতে করতে ভিতরে ঢোকে সে।