বাঁ দিকে, উপেন বিশ্বাস। ়ডান দিকে, দুলাল বর। ফাইল চিত্র।
দল তাঁকে আগেই বহিষ্কার করেছে। তা সত্ত্বেও, এখনও তিনি দলের পতাকা নিয়ে মিছিল-সমাবেশ করেন। তৃণমূলের বেশ কিছু নেতাকর্মী এখনও তাঁর অনুগামী। তাঁদের নিয়েই এ বার তিনি ভোটের ময়দানে বাগদায় তৃণমূল প্রার্থী উপেন বিশ্বাসের সঙ্গে টক্করে নামতে চান। এ জন্য ইতিমধ্যেই তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের দ্বারস্থ হয়েছেন। যাতে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে ফরওয়ার্ড ব্লক তাঁকে সমর্থন করে। তিনি— বাগদার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দুলাল বর।
উপেনবাবুর প্রার্থী হওয়া যে সব তৃণমূল নেতা-কর্মী মানতে পারেননি, শনিবার দুপুরে তাঁরা ঘরোয়া আলোচনায় বসেন। সেখানেই তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হয়। দলের ওই অংশের নেতা সুব্রত পাল জানান, বাগদায় ফের দুলালবাবু প্রার্থী হচ্ছেন। তবে তিনি নির্দল হিসাবে না অন্য কোনও দলের হয়ে দাঁড়াবেন, তা তিনি খোলসা করেননি। সুব্রতবাবু কথায়, ‘‘সেটা ধীরে প্রকাশ্য।’’ দুলালবাবু বলেন, ‘‘উপেনবাবু প্রার্থী হওয়ায় বাগদার মানুষ খুশি নন। বাগদার মানুষের স্বার্থে তাঁরা চাইলে আমি নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়াব। আমি সাত জনের একটি কোর কমিটি তৈরি করেছি। তারাই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ওই বিষয়ে যা বলার সুব্রতবাবুই বলবেন।’’
কিন্তু ফরওয়ার্ড ব্লক কি দুলালবাবুকে মানছে?
ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা বাগদা লোকাল কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী অবশ্য দুলালবাবুকে সমর্থন করবার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘বাগদার মানুষ চান, স্থানীয় কেউ প্রার্থী হোন। এখানকার বেশির ভাগ মানুষের সমর্থন যার দিকে থাকবে তাকে প্রার্থী করা বা সমর্থন করবার বিষয়টি আমরা অবশ্য বিবেচনা করে দেখছি।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বাগদার বিদায়ী বিধায়ক দুলাল বরকে সরিয়ে তৃণমূল উপেনবাবুকে প্রার্থী করেছিল। তারপর থেকেই একের পর নির্বাচনে দুলালবাবু ও তাঁর অনুগামীরা উপেনবাবুর বিরোধিতা করে এসেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে দলেরই একাংশের। উপেনবাবুকে যাতে ফের প্রার্থী করা না হয়, সে জন্য তাঁরা বিস্তর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। দল-বিরোধী কাজের অভিযোগে দুলালবাবুকে অনেক দিন আগেই তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানান তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
সেই দুলালই প্রার্থী হয়ে এ বার উপেনবাবুর বাড়া ভাতে ছাই ফেলার চেষ্টা করছেন বলে মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। উপেনবাবু অবশ্য বিষয়টি গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও নির্বাচনেই নির্দল প্রার্থীরা ভোটে দাঁড়ায়। সেটা কোনও প্রভাব ফেলবে না।’’