ডাল ভেঙে পড়ল যশোর রোডে

ফের একটি মরা ডাল ভেঙে পড়ল যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর। বড়সড় বিপদ এড়ানো গেল অল্পের জন্য। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০১:২১
Share:

বিপদ: রাস্তার মাঝে ডাল ভেঙে পড়েছে। যশোর রোডে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

ফের একটি মরা ডাল ভেঙে পড়ল যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর। বড়সড় বিপদ এড়ানো গেল অল্পের জন্য।

Advertisement

রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পেট্রাপোল থানার উত্তর ছয়ঘরিয়া মোড় এলাকায়। ওই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কের পাশে থাকা প্রাচীন গাছের মরা শুকনো ও বিপজ্জনক ডাল কাটার দাবি তুলেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় সড়ক দিয়ে একের পর এক পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রিবাহী বাস, অন্য যানবাহন ও পথচারীরা যাতায়াত করছিলেন। তাই গাছ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভেঙে পড়া ডালটি অনেকদিন ধরেই বিপজ্জনক ভাবে ছিল। গাছটিও মরা ছিল। যানবাহন মাঝে মধ্যেই গাছে এসে ধাক্কা মারত। ফলে গাছটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আগেই।’’

Advertisement

এ দিন ডাল ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রায় দেড় ঘণ্টা যশোর রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ট্রাক-সহ অন্য যানবাহন আটকে পড়ে। পেট্রাপোলের খুব কাছেই এলাকাটি। ফলে সীমান্ত থেকে আসা-যাওয়া ট্রাক ও যাত্রিবাহী গাড়ি এই রাস্তায় থমকে যায়। পরে পেট্রাপোল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাসিন্দাদের সাহায্যে ডাল কেটে সড়ক স্বাভাবিক করেন।

ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকায় গোটা দশেক গাছের ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। ডাল ভেঙে যে কোনও সময় বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও মহকুমা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি দ্রুত এই ডালগুলি কেটে ফেলা হোক।’’

সম্প্রতি যশোর রোডে গাছের ডাল ভেঙে মানুষের জখম হওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় কালুপুকুর, গাইঘাটা বাজার, চাঁদপাড়া, নহাটা মোড়, জলেশ্বর মোড় ও জয়ন্তীপুর এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে মানুষ জখম হয়েছেন। জয়ন্তীপুরে গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। সেই তারে জড়িয়ে এক ব্যক্তি মারাও যান। প্রতিটি ঘটনার পর বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা মরা ও শুকনো ডাল কাটার দাবি তুলেছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ওই দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন তাঁরা।

গত বছর নভেম্বর মাসে যশোর রোড বা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে থাকা প্রাচীন সব গাছের মরা ও শুকনো ডালপালা কাটার কাজ শুরু হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের জাতীয় সড়ক (ডিভিশন ৫) এর নির্বাহী বাস্তুকার অজয়শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে গাইঘাটার বকচরা এলাকা থেকে চাঁদপাড়া পর্যন্ত গাছের মরা ও বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা শুকনো ডালপালা কাটা হয়েছে। বনগাঁ ও পেট্রাপোল এলাকাতেও বিপজ্জনক ডাল কেটে ফেলা হবে।’’

প্রশাসনের তরফে হাবড়া থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত মোট ১৬৩টি গাছ চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব গাছে মরা ও শুকনো ডালপালা রয়েছে।

কিছুদিন আগে বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির সদস্যেরা সরেজমিনে পরীক্ষা করে ওই গাছগুলো চিহ্নিত করেছিলেন। ওই কমিটির মধ্যে জাতীয় সড়ক, বন দফতর, প্রশাসন ও পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

সড়ক দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে ছোট গাড়ির চালক বলছিলেন, ‘‘বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়। ডাল কাটার কাজ শুরু হওয়াতে এখন নিরাপদ মনে হচ্ছে।’’ যশোর রোড দিয়ে রোজ হাজার হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। অভিযোগ, সড়কে যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন