প্রচারের প্রস্তুতি তৃণমূল প্রার্থীদের

কেউ যাচ্ছেন মন্দিরে মন্দিরে, কেউ ছুটছেন অজমেঢ়় শরিফ

ডানপন্থী রাজনীতিতে ভোট প্রচারে নামার আগে নেতানেত্রীদের মন্দির-মসজিদ-দরগায় মাথা ঠোকার দস্তুর হামেশাই দেখা যায়। তার উপরে, এ বার সামনে জোটের জুজু। দলের অন্দরেই নানা আড়াআড়ি ভাগ ভোগাতে পারে— এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না কোথাও কোথাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীদের অনেকেই যথারীতি প্রচার শুরুর আগে ভরসা রাখছেন ইষ্টদেবতায়।

Advertisement

সামসুল হুদা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৬
Share:

ডানপন্থী রাজনীতিতে ভোট প্রচারে নামার আগে নেতানেত্রীদের মন্দির-মসজিদ-দরগায় মাথা ঠোকার দস্তুর হামেশাই দেখা যায়। তার উপরে, এ বার সামনে জোটের জুজু। দলের অন্দরেই নানা আড়াআড়ি ভাগ ভোগাতে পারে— এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না কোথাও কোথাও। সব মিলিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীদের অনেকেই যথারীতি প্রচার শুরুর আগে ভরসা রাখছেন ইষ্টদেবতায়।

Advertisement

শনিবারই প্রচারে নেমে কালীমন্দিরে পুজো দিয়েছেন রায়দিঘির তৃণমূল প্রার্থী দেবশ্রী রায়। তাঁকে প্রার্থী না করার দাবিতে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে এলাকায়। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের না-পসন্দ হলেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের এই কেন্দ্রে ভরসা রেখেছেন তাঁর উপরেই। প্রার্থী হয়েছেন দেবশ্রী।

ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রের প্রার্থী শ্যামল মণ্ডল এই নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রার্থী হলেন। গতবার ভোটে জিতে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী হয়েছিলেন। সোনারপুরের বাসিন্দা শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা না হওয়ায় নিজের কেন্দ্রে তেমন সময় দেন না। নানা কারণে গতবার ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েও দেড় বছরের মাথায় মন্ত্রিত্ব গিয়েছিল। এ বার সাবধানী শ্যামল। তবে এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভোগাতে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না দলের নেতা-কর্মীদেরই একাংশ।

Advertisement

ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাসের সঙ্গে তাঁর বিবাদের ইতিহাস দীর্ঘ। এখনও ঠিকমতো প্রচার শুরু করতে না পারলেও প্রার্থী তালিকায় নিজের নাম জানার পরেই রক্ষাকালীর বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিতে শুরু করেছেন শ্যামলবাবু। বললেন, ‘‘পোড়ামুড়া ও পুরাতন চাঁদনি মন্দিরে পুজো দিয়েছি। আরও কয়েকটি মন্দিরে পুজো দেবো।’’

কিন্তু প্রচার শুরু করছেন কবে? জানা গেল, এখনও ঠিক হয়নি দিনক্ষণ। ব্লক তৃণমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির সঙ্গে শ্যামলবাবুর ঘনিষ্ঠতা সুবিদিত। শৈবালবাবু আবার পরেশরামের বিরুদ্ধ শিবিরের বলেই পরিচিত। শ্যামলবাবু জানালেন, বুধবার শৈবালবাবুর সঙ্গে আলোচনার পরে ঠিক হবে, কবে দেওয়াল লেখা বা ভোটের প্রচার শুরু হবে। তার আগে দলের সমস্ত অঞ্চল প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা সেরে নেবেন বলে জানালেন প্রাক্তন মন্ত্রী।

ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্রে এ বার নতুন প্রার্থী হয়েছেন ক্যানিং-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লা। শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে শনিবার সন্ধ্যায় অজমেঢ়় শরীফে খাজা বাবার মাজারে চাদর চড়াতে গিয়েছিলেন। রবিবার রাতে ফিরেছেন। সোমবার সকাল থেকে দেওয়াল লিখন ও দলীয় কর্মীদের নিয়ে ছোট ছোট বৈঠক শুরু করেছেন।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত গোসাবার প্রার্থী জয়ন্ত নস্কর অবশ্য মন্দিরে না গিয়ে বরং শুরু থেকেই গ্রামে গ্রামে ছুটছেন। বললেন, ‘‘মানুষের উপরে ভরসা রেখে মানুষের কাছেই যাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন