ক্লাবে জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় প্রহৃত তৃণমূল নেতা ও তাঁর ভাই

দিনের পর দিন ক্লাবের মধ্যে মদ, জুয়ার আসর বসত। যার প্রতিবাদ করায় এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর ভাইকে মারধর খেতে হল দুষ্কৃতীদের হাতে। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, রাখাল দাস নামে বছর তিরিশের এক যুবক কাকদ্বীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০০:০৮
Share:

চিকিৎসাধীন রাখাল। —নিজস্ব চিত্র।

দিনের পর দিন ক্লাবের মধ্যে মদ, জুয়ার আসর বসত। যার প্রতিবাদ করায় এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর ভাইকে মারধর খেতে হল দুষ্কৃতীদের হাতে। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, রাখাল দাস নামে বছর তিরিশের এক যুবক কাকদ্বীপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই গ্রামের তৃণমূলের বুথ কমিটির সভাপতি সুবল দাস ক্লাবের সদস্যদের হুল্লোড়ে অতিষ্ঠ হয়ে ক্লাবে গিয়ে চিৎকার-চেঁচামিচি বন্ধ করতে বলেন। প্রতিবেশীদের অসুবিধা হচ্ছে বলেও জানান। এই নিয়ে ক্লাবের ছেলেদের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। এরপরেই কয়েক জন সুবলবাবুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ক্লাব থেকে তাঁকে মারতে মারতে বাড়ির দিকে নিয়ে আসে দুষ্কৃতীরা। সে সময়ে দাদাকে মারছে দেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ভাই রাখাল। তাঁকে লক্ষ্য করে থান ইট ছুড়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। মাথার বাঁ দিকে চোট লাগে। সুবলবাবুর পরিবারের বাকি সদস্যদের ঘরে আটকে রেখে গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। বাড়ি লক্ষ করে ইট-পাটকেল, মদের বোতল ছোড়া হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ আসে। রাখালবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুবলবাবু বলেন, ‘‘গ্রাম কমিটির সদস্য হওয়ায় ওই ক্লাব সম্পর্কে নানা অভিযোগ প্রতিবেশীরা আমার কাছে করেন। তাই ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্য নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সব স্তরে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ বছর খানেক আগে এক স্কুল ছাত্রীকেও ক্লাবের ছেলেরা কটূক্তি করেছিল। ওই গ্রামের প্রতিবেশী বাবুলাল দাস বলেন, ‘‘ক্লাবের ছেলেদের অত্যাচারে সকলেই তিতিবিরক্ত। কিন্তু গণ্ডগোলের ভয়ে কেউ কিছু বলেন না।’’ ওই ক্লাবের দায়িত্বে লালন দাস আছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘আমি প্রায় সাত মাস ওই ক্লাবের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখিনি। তা ছাড়া, ওই গ্রামে আমি আর এখন থাকি না।’’

Advertisement

২০১০ সালে অক্ষয়নগর গ্রামে কাকদ্বীপ স্টেশনের কাছে রেলের জমিতে ইটের দেওয়াল ও টালির ছাউনি দিয়ে ওই ক্লাবটি তৈরি হয়। ক্লাবের অধিকাংশ সদস্য মৎস্যজীবী। বছর তিনেক ধরে ক্লাব ঘরে ক্লাবের সদস্যেরা প্রায় সারাদিন মদ, জুয়ার আসর বসায় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নেশা করার পরে প্রায়ই ওই আসরে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাধায় তারা। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত চিৎকার-চেঁচামিচি লেগেই থাকে।

ওই দাপাদাপি বন্ধ করতে গত ১৫ মার্চ গ্রামবাসীদের একাংশের গণস্বাক্ষর নিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল এসডিও, এসডিপিও ও থানায়। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু ক্লাবে জুয়া খেলার আসর বসে ঠিকই। সেখানে অভিযানও চালানো হয়। ওই ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়েছে। শনিবার রাতের ঘটনায় ওই ক্লাবের কয়েক জন সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন