সুরক্ষা ছাড়াই ম্যানহোলে নেমে মৃত্যু দুই শ্রমিকের

শনিবার খড়দহের রুইয়ায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নির্মীয়মাণ জলাধারের ভিতরে কাজ করতে নেমে এ ভাবেই মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম প্রদীপ বর (২৫) ও সমীর দাস (৩০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ০২:২৭
Share:

তোলা হচ্ছে দেহ। শনিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

তৈরির পরে বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ ছিল জলাধারের সব ক’টি ম্যানহোল। শনিবার একটি মাত্র ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে ভিতরে নামতেই ছটফট করতে শুরু করলেন এক শ্রমিক। সঙ্গীকে বাঁচাতে আর এক জন নামতেই তাঁরও একই অবস্থা হল। পরে দমকল এসে ওই দুই শ্রমিককে উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

শনিবার খড়দহের রুইয়ায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নির্মীয়মাণ জলাধারের ভিতরে কাজ করতে নেমে এ ভাবেই মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম প্রদীপ বর (২৫) ও সমীর দাস (৩০)। জলাধারে নামার জন্য কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগে ঠিকাদারকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ওই স্কুলে দমকলের নিয়ম মেনে ৬০ হাজার লিটারের জলাধার তৈরি হচ্ছিল। মোট সাত ফুট গভীরতার জলাধারটির সাড়ে তিন ফুট রয়েছে মাটির নীচে, বাকিটা উপরে। জলাধারটিতে পাঁচটি ম্যানহোল রয়েছে। তৈরির পরে প্রতিটি ম্যানহোলই শক্তপোক্ত ভাবে আটকানো ছিল। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই শ্রমিকেরা কাজে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি মাত্র ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে প্রথমে প্রদীপ নীচে নামেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁকে নীচে ছটফট করতে দেখে বাঁচানোর জন্য নামেন সমীরও। তিনিও একই ভাবে শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকেন। বাকি শ্রমিকেরা দু’জনকে নেতিয়ে পড়তে দেখে চেঁচামেচি জুড়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল ঘটনাস্থলে আসে।

Advertisement

জলাধারটির ভিতরে সামান্য জল ছিল। তা ছাড়াও ঢালাই হওয়ার ফলে বাঁশ, প্লাস্টিকের অংশ জলে পড়ে পচন ধরেছিল। দমকল কর্মীদের অনুমান, তাতে ওই বদ্ধ জলাধারের ভিতরে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়ে থাকতে পারে। আর তার জেরেই শ্বাসকষ্ট হয়ে ওই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানায়, প্রবীর সন্দেশখালি ও সমীর খেজুড়ির বাসিন্দা। তবে ঘটনার সময়ে সেখানে ঠিকাদার সংস্থার তরফে জীতেশ্বর রায় নামে এক ব্যক্তি উপস্থিত থাকলেও কেন কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া ওই শ্রমিকেরা নীচে নামলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

স্কুলের পরিচালন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজটি ঠিকাদারের দায়িত্বে দিয়েছিলাম। তবুও ওই দুই শ্রমিকের পরিবারকে স্কুলের তরফে সব রকমের সাহায্য করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন