Bagda

গাড়ি উল্টে মৃত্যু উচ্চ মাধ্যমিকের দুই পরীক্ষার্থীর

পুলিশ ঘটনার পরে গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০২:২০
Share:

মৃত অরুণ দাস (বাঁ দিকে) ও পার্থ রক্ষিত। —নিজস্ব চিত্র

সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ বার রং খেলবে না বলে ঠিক করেছিল পার্থ রক্ষিত (১৮)। হঠাৎই সেখানে হাজির কয়েকজন বন্ধু। তারা রঙ খেলতে জোরাজুরি শুরু করে। অভিযোগ, এক তরুণ পার্থর গেঞ্জি ছিঁড়ে দেয়। অন্য এক বন্ধু পার্থকে নিজের একটি গেঞ্জি দেয় পরতে। তাকে টেনেটুনে গাড়িতে তুলে নেয় বন্ধুরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই গাড়িই উল্টে মৃত্যু হয়েছে পার্থ ও তার এক বন্ধু অরুণ দাসের (১৮)। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে ৯ জন। অরুণেরও এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। দু’জনেই বয়রা সম্মেলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত।

Advertisement

সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা থানার মেহেরানি সেতুর হেলেঞ্চা-বয়রা রাজ্য সড়কে। পুলিশ ঘটনার পরে গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িতে ডিজে বক্স ও জেনারেটর তুলে উদ্দাম নাচ করতে করতে রং খেলায় মেতে উঠেছিল এক দল যুবক-কিশোর। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকলকে উদ্ধার করে বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় চিকিৎসকেরা তাঁদের বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় পার্থ ও অরুণের। দু’জনের বাড়ি বয়রা এলাকায়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পার্থর বাবা প্রভাস। তিনি দিনমজুর। পার্থ একমাত্র ছেলে। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। প্রভাস বলেন, ‘‘ছেলে রং খেলতে চায়নি। ওকে বন্ধুরাই জোর করে নিয়ে গেল। শুনেছি, গাড়ির সামনে একটি বাচ্চা চলে এসেছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। কিন্তু আমরা এখন কী নিয়ে বাঁচব!’’ অরুণরা দুই ভাই। অরুণ বড়। বাবা কার্তিক দিনমজুরের কাজ করেন। তিনিও ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ঘটনায় জখম হয়েছে সুমন দাস। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পনেরোজন ছিলাম। কুরুলিয়া বাজারে এসে গাড়ির চালকের বদলে অন্য একজন গাড়ি চালাতে থাকে।’’ বয়রা পঞ্চায়েতের প্রধান অসিত মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘চালকের বদলে অন্য একজন গাড়ি চালাচ্ছিল। তার ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। গাড়ি ঠিক মতো চালাতেও পারে না। পুলিশের কাছে দাবি করেছি, ওকে গ্রেফতার করতে হবে।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুলিশের নজদারির অভাবে সোমবার মদ্যপ অবস্থায় বাইকে ও গাড়িতে যুবকেরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে। ডিজে বেজেছে। পুলিশ আগেভাগে পদক্ষেপ করলে দু’টি প্রাণ অকালে ঝরে যেত না।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন