দুই সন্দেহভাজন বাংলাদেশি যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাগদার ভবানীপুর এলাকায়। পুলিশ অনুপ্রবেশের অভিযোগে খোকন ব্যাপারী ও দিদার হোসেন নামে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। তাদোর বাড়ি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ এলাকায়। ধৃতদের বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির বাড়িতে ধৃত যুবকেরা আশ্রয় নিয়েছিল। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি জাল পাসপোর্ট তৈরির সঙ্গে যুক্ত। এ দিন সন্ধ্যায় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা ওই বাড়ির থেকে খোকন ও দিদারকে ধরে। তাদের মারধর করা হয়েছে বলেও জানান গিয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রথমে ওই দুই যুবক তাদের নাম বাড়ির ঠিকানা বলতে চাইনি। গ্রামের মানুষ জোর করাতে তারা তাদের নাম জানায়। কিন্তু বাড়ির ঠিকানা প্রথমে বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ বলেছিল। পরে আবার বাংলাদেশ ঢাকার কথাও বলে। এরপরই গ্রামের মানুষ পুলিশকে খবর দেয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায়ই ওই ব্যক্তির বাড়িতে বাংলাদেশিরা এসে আশ্রয় নেয়। যারা আশ্রয় নেয় তারা কখনই সকালে বাড়ি থেকে বেরোয় না। রাত বারোটা নাগাদ একটি গাড়ি প্রায়ই ওই ব্যক্তির বাড়িতে আসে। সেই গাড়িতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিরা চলে যায়। ভোর রাতে আবার সেই গাড়ি অন্যদের ওই বাড়িতে পৌঁছয়। যে ঘরে বাংলাদেশিরা থাকে সেই ঘরটি তালা দিয়ে রাখা হয়। এর জন্য ওই ব্যক্তি আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের কাছ থেকে টাকা নেয়। কিন্তু এই ঘটনার আগে থেকেই ওই ব্যক্তি ও তার স্ত্রী পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
তবে পলাতক ব্যক্তির বাড়ি থেকে প্রচুর ভুয়ো রেশন কার্ড, জাল পাসপোর্ট, হলোগ্রাম, জন্মের শংসাপত্র পুলিশ উদ্ধার করেছে। পুলিশের অনুমান, জাল ভোটার, আই কার্ড ও ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির চক্রের সঙ্গে ওই ব্যক্তি যুক্ত। মোটা টাকার বিনিময়ে সে বাংলাদেশিদের এ দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিপত্র তৈরি করে দেয়। বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে মানুষ পারাপারের সঙ্গেও ওই ব্যক্তি যুক্ত থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। সিআই গাইঘাটা পার্থ সান্যাল বলেন, ‘‘কী উদ্দেশ্যে তারা বাগদার ভবানীপুর এলকায় ওই ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল তা খতিয়ে দেখছি।’’