Hanakhali Village

আজও বিদ্যুৎ আসেনি, গ্রামে অনুন্নয়নের ছবি প্রকট

বাম আমল থেকেই গ্রামের মানুষ সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তৃণমূলের আমলেও ছবিটা বদলায়নি। নির্বাচনের আগে নেতারা গ্রামে এসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৭
Share:

হানাখালি গ্রামের অবস্থা এখনও এমনই।  নিজস্ব চিত্র।

কালীপুজোর রাতেও আঁধারে ঢাকা থাকল ভাঙড়ের হানাখালি গ্রাম।

Advertisement

২০২৩ সালে পৌঁছেও বিদ্যুৎহীন হানাখালি। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামটি পিছিয়ে বহু দিক থেকেই। রাস্তাঘাট বেহাল। পানীয় জলের অভাব রয়েছে। শৌচালয় নেই বহু বাড়িতে। আজ, কালী পুজোর

ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হানাখালি গ্রাম। নিউটাউন লাগোয়া এই গ্রামে ৭০টি পরিবারের বাস। জনসংখ্যা পাঁচশোর বেশি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাধীনতার এত বছর পরেও বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। গ্রামের অধিকাংশ রাস্তা মাটির। অন্যান্য পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে কংক্রিট, পিচের রাস্তা তৈরি হয়েছে। সেখানে এই গ্রামের মানুষকে মাটির এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। পাকা রাস্তা না থাকায় গাড়ি ঢুকতে পারে না গ্রামে। সমস্যায় পড়েন প্রসূতিরা। গ্রামটি মেছোভেড়ি-বেষ্টিত। খাল, মেছোভেড়ি পার হওয়ার জন্য বাঁশের সাঁকো একমাত্র ভরসা। গ্রামে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থাকলেও তার নিজস্ব ভবন নেই। অধিকাংশ বাড়ি মাটির।

Advertisement

অভিযোগ, বাম আমল থেকেই গ্রামের মানুষ সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তৃণমূলের আমলেও ছবিটা বদলায়নি। নির্বাচনের আগে নেতারা গ্রামে এসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। পরে আর কাজ হয় না বলে অভিযোগ। গ্রামের মানুষ বেশিরভাগই ভেড়িতে কাজ করেন। মহিলারা অনেকে কলকাতায় গৃহসহায়িকার কাজ করেন। গ্রামের বাসিন্দা দিপালী প্রামাণিক বলেন, “গ্রামে আজও বিদ্যুৎ ঢোকেনি। বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সমস্ত কাজকর্ম করতে সমস্যা হয়। রাস্তাঘাট না থাকায় অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। সব দিক থেকেই বঞ্চিত এই গ্রাম।”

নীলা মণ্ডল নামে গ্রামের এক মহিলার কথায়, “এই গ্রামে কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে চায় না। পাকা রাস্তা না থাকায় বর্ষায় একহাঁটু কাদা পেরিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে যেতে হয়। পানীয় জলের জন্য গভীর নলকূপ নেই। বাইরে থেকে জল বয়ে আনতে হয়।”

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাপি মণ্ডল বলেন, “অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে গ্রামের মানুষ বঞ্চিত। আমাদের নতুন বোর্ড গঠন হয়েছে। গ্রামের উন্নয়ন নিয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা করেছি।”

বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবির বলেন, “আমি গ্রামে ঘুরে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছি। উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েত ও ব্লকের মাধ্যমে যতটা কাজ করা সম্ভব করব।” ভাঙড় ২ বিডিও পার্থ মুখোপাধ্যায় জানান, বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, সংযোগ দেওয়ার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। অন্যান্য সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তাঁর আশ্বাস। ভাঙড়ের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলেন, “ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য অনেক আগেই পোস্ট বসানো হয়েছিল। কিন্তু কী কারণে সংযোগ দেওয়া হয়নি, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন