ভাঙাচোরা: দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের টাকায় তৈরি হয়েছিল শৌচাগার। অভিযোগ, সেই শৌচাগারের মান এতই খারাপ যে, তা ভেঙে জখমও হচ্ছেন বাসিন্দারা। এমন ঘটনা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করতে পূর্ত দফতরকে নির্দেশও দিয়েছে।
গত রবিবার দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা (২) পঞ্চায়েতে ঘটনার পরে বিষয়টি সামনে এসেছে। সেখানে শৌচাগারে সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা ভেঙে সাড়ে ছ’ফুট গভীরে পড়ে গুরুতর জখম হন এক মহিলা। মই নামিয়ে কোনও মতে তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আলিমান বিবি নামে ওই মহিলা এখন বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশে অভিযোগের পরে বুধবার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ‘ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম’ (এনআরইজিএস) তহবিল থেকে দেগঙ্গা ব্লকের সর্দারপাড়ার মাজেদ আলি সর্দারের বাড়িতে মাস কয়েক আগে শৌচাগারটি তৈরি হয়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ঠিকা সংস্থা তা তৈরি করে। বুধবার মাজেদ বলেন, ‘‘এত নিম্ন মানের জিনিস দিয়ে তৈরি হয়েছে যে, আমার স্ত্রী শৌচাগার পরিষ্কার করতে পা রাখতেই তা ভেঙে নীচে পড়ে। কোনও মতে বেঁচে গিয়েছে। অথচ এটা তৈরি করতে নির্দেশিকা অনুযায়ী আমাকেও ১১০০ টাকা দিতে হয়েছে।’’
বিষয়টি নিয়ে দেগঙ্গা পুলিশ ও বেড়াচাঁপার পঞ্চায়েতের প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায় ওই মহিলার পরিবার। স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার দেগঙ্গার বিডিও-র কাছেও অভিযোগ জানান মাজেদ। দেগঙ্গার বিডিও অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ভোটের মুখে এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী তুষার দাস বলেন, ‘‘নিম্ন মানের জিনিস দিয়ে তৈরি হয়েছে শৌচাগার। বিষয়টি উপরতলার নজরে আনা হবে।’’ বেড়াচাঁপা (২) পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের সুষমা পাড়ুই বলেন, ‘‘শৌচাগার তৈরির দায়িত্ব পঞ্চায়েতের নয়। জেলা প্রশাসনের এনআরইজিএস দফতর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করে। এ সব অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।’’