পাঁচ বছর ধরে আটকে থাকা কাজ চালু ৫ দিনেই

রায়দিঘির মথুরাপুর-২ ব্লকের নন্দকুমারপুরের ২ নম্বর পাম্প স্টেশন থেকে জল ছাড়ার পাশাপাশি এলাকা জুড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০০:০০
Share:

এলাকা জুড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।

একটি পাম্প স্টেশন চালুর জন্য এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব ৫ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে ঘুরেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা এই কাজ মন্ত্রীর নির্দেশে মাত্র ৫ দিনেই চালু হয়ে গেল! রায়দিঘির মথুরাপুর-২ ব্লকের নন্দকুমারপুরের ২ নম্বর পাম্প স্টেশন থেকে জল ছাড়ার পাশাপাশি এলাকা জুড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজও দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।

Advertisement

ওই ব্লকের নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েত এলাকা নদীজঙ্গলে ঘেরা। ২৩টি বুথ-অঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বাস। সারা বছরই এখানে জলকষ্ট। তবে, গ্রীষ্মের মুখে এলাকার জলস্তর নেমে গিয়ে পাশাপাশি গ্রামগুলির নলকূপগুলি অকেজো হয়ে যায়। জল সঙ্কটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এই সঙ্কটের সমাধানের জন্য ২০১১ সালে ওই এলাকায় তিনটি পাম্প স্টেশন তৈরি করা হয়। সে সময় ১ ও ৩ নম্বর পাম্প স্টেশনদু’টিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। ২ নম্বর পাম্প স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। ওই স্টেশনটিতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বছরের পর বছর ধরে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে ঘুরেছেন। কাজ কিছুই হয়নি। এদিকে, পাম্প স্টেশনটি দীর্ঘদিন বন্ধ পড়ে থাকায় তার বেশ কিছু মূল্যবান যন্ত্রাংশও নষ্ট হয়ে যায়।

Advertisement

৩ ফেব্রুয়ারি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পাথরপ্রতিমা ব্লকের কর্মী সম্মেলন ছিল। ওই দিন তিনি রায়দিঘি হয়ে বোলেরবাজার সেতু পার হয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ওই রোডেই পড়ে নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীর মোড়। মন্ত্রী যে ওই রাস্তা দিয়ে যাবেন, সে খবর আগে থেকেই জানতে পারেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই দিন মন্ত্রীর গাড়ি সকাল সাড়ে ১১টার সময় লক্ষ্মীমোড়ে পৌঁছলে জনাপঞ্চাশ কর্মী-সমর্থক গাড়ি ঘিরে ধরে মন্ত্রীর কাছে পাম্পটি চালু করার আবেদন জানান। মন্ত্রী বন্ধ থাকা ২ নম্বর পাম্প স্টেশনটিতে যান। সেখান থেকেই বিভাগীয় দফতরে ফোন করে বিস্তারিত খোঁজও নেন। সম্মেলনে যাওয়ার আগে সমবেত জনগণের কাছে সুব্রতবাবু কথা দেন ১ সপ্তাহের মধ্যে পাম্প চালু করে দেওয়া হবে।

পরের দিনই এলাকার সাধারণ মানুষ অবাক হয়ে দেখলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন! যে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বছরের পর বছর ধরে হয়রানি হতে হয়েছে, সেই সংযোগও মাত্র দু’দিনেই পাওয়া গেল! পড়ে থাকা পাম্প স্টেশনের ঘরটিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারও করা হয়েছে।

বিভিন্ন গ্রামে যেখানে মাটির নীচের পাইপলাইন দীর্ঘদিন পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলি তুলে ফেলে মেশিনের সাহায্যে মাটি কেটে নতুন ভাবে পাইপলাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক কিলোমিটার লাইন পাতাও হয়ে গিয়েছে। পাম্প স্টেশনের খারাপ হয়ে যাওয়া পুরনো সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলে নতুন করে সবকিছু লাগানো হয়েছে। চালু হয়েছে জল সরবরাহও।

ওই পঞ্চায়েতের সভাপতি কানাই গিরি বলেন, যে পাম্প স্টেশন চালুর জন্য বছরের পর বছর ঘুরতে হয়েছে, মন্ত্রীর কথায় তা ৫ দিনেই চালু হয়ে গেল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন