মেয়ে ‘অষ্টম’, শুনে বিস্মিত বাবা

মা মহামায়া বলেন, ‘‘অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পছন্দ করে মেয়ে। কোনও দিন ভোরবেলা উঠত না। বাড়িতে দু’জন শিক্ষক ছিলেন। আর স্কুলের দিদিরা। আমাদের এর থেকে বেশি সামর্থ্যও নেই।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আমতলা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০০:৪৯
Share:

পরিবারের সঙ্গে শ্রীমন্তী। নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকেই টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা ঝন্টু চক্রবর্তী। মেয়ে শ্রীমন্তী এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কোন জেলা কেমন ফল করল তা দেখতেই সকাল থেকে টিভির সামনে ঝন্টু। কিন্তু অষ্টম স্থানে তাঁর মেয়ের নাম ঘোষণা হবে—তা ভাবতেই পারছেন না তিনি।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্রীমন্তী চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই মোবাইলে একের পর এক ফোন আসতে শুরু করে। ক্রমশ সংশয় কাটে ঝন্টুর। স্কুলের শিক্ষিকারাও ফোন করে শ্রীমন্তীর বিষয়টি জানান।

হোমিওপ্যাথি ওষুধের একটি কারখানায় চাকরি করেন ঝন্টু। কোনও রকমে সংসার চলে। মেয়ের সব আবদার পূর্ণ করতে পারেননি। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মেয়ে মেধাবী। পড়াশোনার কোনও বাঁধাধরা সময় নেই তার। যখন পড়তে ভাল লাগত তখনই পড়ত। নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের স্কুলের শিক্ষিকাদের কথায়, ‘‘শুধু মেধাবী নয়। শ্রীমন্তী সকলের থেকে অনেকটাই আলাদা। সিলেবাসের বাইরে গিয়েও নানা বিষয় নিয়ে আগ্রহ ছিল তার। কোনও দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকত না। শুধু পড়াশোনা নয়, স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিত শ্রীমন্তী।’’

Advertisement

মা মহামায়া বলেন, ‘‘অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পছন্দ করে মেয়ে। কোনও দিন ভোরবেলা উঠত না। বাড়িতে দু’জন শিক্ষক ছিলেন। আর স্কুলের দিদিরা। আমাদের এর থেকে বেশি সামর্থ্যও নেই।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রেজাল্টে খুশি শ্রীমন্তী। টেস্ট পরীক্ষায় ৬৪০ নম্বর পেয়েছিল। মূল পরীক্ষায় তা বেড়ে গিয়ে ৬৮৩ হয়েছে। শ্রীমন্তীর কথায়, ‘‘আমার পড়াশোনার কোনও রুটিন নেই। তবে আমি পড়তে ভালেবাসি। স্কুলের দিদিরাও আমাকে খুব সাহায্য করেছেন। এখন দিদিরা যেমন বলবেন তেমন করব। তা ছাড়া, বাবা-মা তো রয়েছেনই।’’

ঝন্টুর কথায়, ‘‘সরকারি প্রকল্পের কন্যাশ্রীর টাকা পাওয়ায় মেয়ের পড়াশোনার খরচের অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শ্রীমন্তীকে সব রকম সরকারি সাহায্য করা হবে বলে পঞ্চায়েতের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন