TMC

WB Municipal Election 2022: বাক্স খুলতেই ঘরের কাঁটায় বিদ্ধ কামারহাটি

সেই প্রমাণ দিতে সবুজ আবির মেখে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মিছিলও করতে দেখা যায় সোমনাথকে।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৬:৫২
Share:

থিকথিকে: পানিহাটিতে ভোট গণনা কেন্দ্র গুরুনানক ডেন্টাল কলেজের বাইরে বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়। বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বুধবার ভোট বাক্স খুলতেই নির্দল কাঁটার খোঁচায় বিদ্ধ কামারহাটি! তবে ডানে-বাঁয়ের অন্য দুই পুরসভা বরাহনগর ও পানিহাটিতে খাতা খুলতে পারেনি নির্দল। তবে ওই দুই পুরসভা যে বিরোধী শূন্য হয়েছে, তেমনটাও নয়। বরাহনগরে সিপিএম দু’টি এবং পানিহাটিতে একটি করে ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।

Advertisement

এ দিন সকাল থেকেই পানিহাটির গুরুনানক ডেন্টাল কলেজে ভিড় জমিয়ে ছিলেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। কামারহাটি, পানিহাটির মতো বহু পুরসভার ক্ষেত্রেই তৃণমূল ও সিপিএম প্রার্থীদের কয়েক জনকে পাশাপাশি বসে গল্প করতেও দেখা গেল। তবে উদ্বেগে ছিলেন কামারহাটির কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় নেতা। কারণ, প্রতিটি রাউন্ডেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন নির্দল প্রার্থীরা। প্রথমে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সোমনাথ রায়চৌধুরী জিতেছেন বলে খবর আসে। জানা যায়, প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৮৮ শতাংশ পেয়েছেন তিনি। ভোট ঘোষণার পর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী। ফলে শাসকদলের কোনও এজেন্টও গণনা কেন্দ্রে ছিলেন না। সোমনাথ বলেন, “লড়াই ছিল সিপিএমের সঙ্গে। একটাই লক্ষ্য, দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) উন্নয়নে শামিল হওয়া। দলেই (তৃণমূল) ছিলাম দলেই আছি।”

সেই প্রমাণ দিতে সবুজ আবির মেখে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মিছিলও করতে দেখা যায় সোমনাথকে। শাসকদলের সঙ্গে থেকে উন্নয়নের কাজ করতে চান ১৫ নম্বরের নির্দল প্রার্থী সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ও। ৬ নম্বরে জিতেছেন নির্দলের রুকসানা খাতুন। তবে সুশান্ত ও রুকসানা বিপুল ভোটে জেতেননি। তৃণমূলের থেকে ২৬৫ মতো ভোটে সুশান্ত আর রুকসানা মাত্র ৫৩ ভোটে জিতেছেন। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার দাবি, “লড়াই ছিল নিজেদের মধ্যে। সেখানে এমনটা তো হওয়ারই ছিল।” স্থানীয় নেতারা এটাও জানাচ্ছেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের সঙ্গে নির্দলের বিবাদের কারণেই জয় এসেছে সিপিএমের।

Advertisement

অন্য দিকে, বরাহনগরে গত বারের ২২ নম্বর ওয়ার্ড এ বারেও দখলে রেখেছে সিপিএম। সঙ্গে এসেছে ৩৪ নম্বরও। বিধানসভায় সব ওয়ার্ডে জিতলেও পুরভোটে দু’টি আসন হাতছাড়া হওয়ায় তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী দিলীপনারায়ণ বসু ও অঞ্জন পাল বলেন, “দু’টি আশা করিনি। তবে মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন, তাতে হার-জিত থাকবেই। মিলেমিশে এলাকার উন্নয়ন করতে হবে।” নিজেদের এলাকাকে তাঁরা এক নম্বরে রাখতে চান বলে জানালেন কামারহাটির দুই নতুন মুখ— বিধায়ক মদন মিত্রের বৌমা মেঘনা মিত্র ও অভিনেত্রী শ্রীতমা ভট্টাচার্য। দলের একাংশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগে ফলাফল নিয়ে সংশয়ে ছিলেন ২৯ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী। তিনি বহিরাগতদের ঢুকিয়েছেন বলে, চড়াও হয়েছিলেন স্থানীয়েরাও।

গণনার প্রথমে সিপিএম প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও, টেক্সম্যাকো এলাকার ভোটে ক্রমশ পিছিয়ে পরে কয়েকশো ভোটে তিনি পরাজিত হন তৃণমূলের নির্মলা রাইয়ের কাছে। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে শেষ হাসি হাসলেন বরাহনগরের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক, কামারহাটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোপাল সাহা, উপ-প্রধান তুষার চট্টোপাধ্যায়রা। তবে পানিহাটির ৭ নম্বরে কংগ্রেস ও ৩০ নম্বরে সিপিএমের জয়ের প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জেরেই জেলার সব পুরসভা আমাদের দখলে থাকলেও, বাম, কংগ্রেস, নির্দলও কয়েকটি আসন পেয়েছে। যা প্রমাণ করে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হয়েছে।”

আবার খড়দহ পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড দখলে রেখে গত তিরিশ বছরের বেশি সময়ের ধারাবাহিকতা এ বারেও অক্ষুণ্ণ রাখল নির্দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন