প্রতিরোধ বাড়তেই খতম দুষ্কৃতীর খেল

লাগাতার সহ্যের পরে এ বার শুরু হয়েছে প্রতিরোধ। ইতিমধ্যে আহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অপরাধীদের ধরতে নাকানিচোবানি খেয়েছে খোদ প্রশাসনও। অবশেষে গুলি করে ধরা হয়েছে দু’জনকে। তবু এলাকায় আতঙ্ক কমছে না।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০১:৪০
Share:

লাগাতার সহ্যের পরে এ বার শুরু হয়েছে প্রতিরোধ। ইতিমধ্যে আহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। অনেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অপরাধীদের ধরতে নাকানিচোবানি খেয়েছে খোদ প্রশাসনও। অবশেষে গুলি করে ধরা হয়েছে দু’জনকে। তবু এলাকায় আতঙ্ক কমছে না।

Advertisement

বছরের গোড়াতেই তাদের তাণ্ডবে তটস্থ ছিল ব্যারাকপুরের মোহনপুর। জখম হন জনা চল্লিশ। অপরাধী পাকড়াও-ও হয়। কিন্তু তার পরেই বেড়ে গিয়েছে তার দলবলের তাণ্ডব। ফের নতুন করে আবির্ভাব ঘটেছে আর এক জনের। স্রেফ মে মাসেই তার শিকারের সংখ্যা ৫১ ছাড়ায়। শুরু হয় জোরতল্লাশি। তবু তাকে ধরা করা কি মুখের কথা! এই আমগাছের ডালে, তো ওই বটগাছের মগডালে। দশ দিন ধরে নাকানিচোবানি খাইয়ে শেষমেশ হার মেনেছে বীরপুঙ্গব। মঙ্গলবার হনুমানটিকে ধরতে পেরেছে বন দফতর।

ব্যারাকপুর বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার অসিত কুণ্ডু জানান, তাড়া খেয়ে ক্লান্ত হনুমানটি মোহনপুরে কল্যাণী বাইপাসের পাশে আমগাছে বিশ্রাম নিচ্ছিল, তখনই তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বন্দি করা হয়। জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক নিতাই সাহা বলেন, ‘‘হনুমানটিকে ধরতে দশ দিন ধরে বন দফতরের ১২ জন অফিসার ও কর্মী এলাকা চষে ফেলেন। তবে হাতি বা বাঘকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করার চেয়ে হনুমানকে বাগে আনা ঢের শক্ত। কারণ, সে নিমেষে ডাল থেকে ডালে ছুটে বেড়ায়।’’

Advertisement

এ বছরের গোড়ায় তাণ্ডব চালানো হনুমানটির ঠাঁই হয়েছিল সল্টলেকের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এ বারের ‘আসামি’কেও বুধবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সেখানেই। ওই কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন পরে হনুমানটিকে কাছাকাছি জঙ্গলে ছাড়া হবে। কিন্তু মোহনপুরের আতঙ্কিত বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ফের অন্য কোনও হনুমান হামলা চালাবে না তো?

কিন্তু কেন এমন ক্ষিপ্ত বানরকুল?

বন দফতরের বক্তব্য, কল্যাণী বাইপাসের দু’ধারে প্রচুর হনুমানের বাস। রাস্তা সম্প্রসারণ এবং এলাকায় বহুতল নির্মাণের জেরে প্রচুর গাছ কেটে ফেলায় তাদের খাবার ও বাসস্থানে টান পড়েছে। বন দফতরের হিসেবে উপদ্রুত মোহনপুর এলাকায় এখনও ৬০টির মতো হনুমান রয়েছে। খাবারের লোভেই তারা হামলা চালাচ্ছে লোকালয়ে। বাধা পেলেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। নিতাইবাবু বলেন, ‘‘এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা কী করা যায়, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন