মহিলার মৃত্যুতে ভাঙচুর নার্সিংহোমে

পুলিশ জানিয়েছে, দীপা রায় (২৪) নামে ওই তরুণীর বাপের বাড়ি ভরতপুরে। মঙ্গলবার সকালে বনগাঁর ওই মহিলাকে প্রতাপগড়ের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩০
Share:

ধন্ধুমার: পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি জনতার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ভুল চিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলার মৃত্যু হয়েছে— এই অভিযোগ তুলে নার্সিংহোম ভাঙচুর চালাল রোগীর বাড়ির লোকজন। ভাঙচুর করা হয় ওই চিকিৎসকের চেম্বারও। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জনতার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় বনগাঁ শহরের রেটপাড়া ও প্রতাপগড় এলাকায়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, দীপা রায় (২৪) নামে ওই তরুণীর বাপের বাড়ি ভরতপুরে। মঙ্গলবার সকালে বনগাঁর ওই মহিলাকে প্রতাপগড়ের ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক বিপদভঞ্জন বিশ্বাস তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। সে সময় থেকেই দীপার শরীর খারাপ হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তাঁকে দ্রুত বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি মারা যান।

তাঁর পরিবারের তরফে থানায় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। চিকিৎসকদের একটি দল গঠন করে পুলিশ মহিলার ময়না-তদন্তের ব্যবস্থা করেছে। দীপার স্বামী অমিতবাবু বলেন, ‘‘ভুল চিকিৎসাতেই স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অস্ত্রোপচারের সময়ে ওর শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে যায়।’’ অমিতবাবু জানান, দীপাদেবীকে ওই চিকিৎসকই দেখছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শেই স্ত্রীর আলট্রা সনোগ্রাফি করানো হয়। ওই রিপোর্টে চিকিৎসক জানান, ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অস্ত্রোপচার করে তা বের করতে হবে।

Advertisement

অভিযুক্ত চিকিৎসক অবশ্য ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মহিলা আট সপ্তাহ অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। প্রথমে ভাল থাকলেও পরে ভ্রূণটি নষ্ট হয়ে যায়। নার্সিংহোমে ও হাসপাতালে মহিলার উপযুক্ত চিকিৎসা করানো হয়েছিল।’’

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ওই মহিলাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এখানে অস্ত্রোপচার করে তাঁর জরায়ু বাদ দিতে হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে রক্ত দেওয়া হয়। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক থাকায় এইচডিইউ–তে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো গেল না।’’

দীপার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই দল বেঁধে তাঁর আত্মীয়েরা প্রথমে নার্সিংহোমে গিয়ে ভাঙচুর চালান। নার্সিংহোমে ভর্তি অন্য রোগীরা তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ক্ষিপ্ত লোকজন চড়াও হয় রেটপাড়ায় বিপদভঞ্জনের চেম্বারেও। সেখানেও ভাঙচুর চলে।

নার্সিংহোমের মালিক স্বপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই মহিলা আগে বার তিনেক গর্ভপাত করিয়েছিলেন। এই তথ্য তিনি চিকিৎসকের কাছে গোপন করেছিলেন। চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন