‘একটা বাইক না দেওয়ায় মেয়েটাকে মেরে ফেলল ওরা!’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ মাস আগে দেগঙ্গার চৌরাশির মোল্লাপাড়ার শওকত মণ্ডলের ছোট মেয়ে রুবিনার (পাপিয়া) সঙ্গে সামাজিক মতে বিয়ে হয় চাকলার রানিহাটির বাসিন্দা, পেশায় কৃষক নজরুল মণ্ডলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৭
Share:

রুবিনা খাতুন

বিয়ে হয়েছিল মাত্র পাঁচ মাস আগে। অভিযোগ, দাবি মতো পণ দেওয়ার পরেও ফের মোটরবাইক কিনে দেওয়ার জন্য চলছিল শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। আরও অভিযোগ, সেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই গৃহবধূ। মৃতার নাম রুবিনা খাতুন (১৯)। মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই খবর শুনেই হাসপাতাল থেকে চম্পট দেয় রুবিনার স্বামী ও তার সঙ্গীরা। তরুণীর পরিবার স্বামী, ভাসুর, শ্বশুর, শাশুড়ির নামে দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ করে। অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ মাস আগে দেগঙ্গার চৌরাশির মোল্লাপাড়ার শওকত মণ্ডলের ছোট মেয়ে রুবিনার (পাপিয়া) সঙ্গে সামাজিক মতে বিয়ে হয় চাকলার রানিহাটির বাসিন্দা, পেশায় কৃষক নজরুল মণ্ডলের। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে রুবিনার মা-বাবা জানিয়েছেন, গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে তাঁরা খবর পান, মেয়ে অসুস্থ হয়ে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি। সেখানে গিয়ে শওকতেরা জানতে পারেন, রুবিনা কীটনাশক খেয়েছেন। পরের দিন শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছুটি করিয়ে বাপের বাড়িতে দিয়ে যায়। তার পরেই রুবিনা মা-বাবাকে জানান, মোটরবাইক কিনে না দেওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে বিষের শিশি হাতে দিয়ে খেয়ে মরতে বলে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতেই তরুণীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মারা যান রুবিনা। তাঁর মা নেহার বিবি বলেন, ‘‘বিয়েতে নগদ এক লক্ষ টাকা, সোনার গয়না-সহ আসবাব দিয়েছিলাম। তার পরেও মোটরবাইক কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত মেয়ের উপর। তা না দেওয়ায় মারধরও করত। সহ্য করতে পারেনি আমার মেয়ে। ওকে সংসারটাই করতে দিল না শ্বশুরবাড়ির লোকজন।’’

Advertisement

রুবিনার বাবা শওকত মণ্ডলের আক্ষেপ, ‘‘যে মেয়েটাকে আমি ১৯ বছর ধরে মানুষ করলাম, তাকে পাঁচ মাসেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চিনতে পারল না? একটা বাইক না দেওয়ায় মেয়েটাকে মেরে ফেলল?’’

শান্ত, সবার প্রিয় মেয়েটা শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে বিষ খেয়েছে, বিশ্বাসই করছেন না প্রতিবেশীরা। সকলের একটাই দাবি, অভিযুক্তদের শাস্তি হোক। তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে তরুণীর পরিবারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন