প্রতীকী ছবি।
অন্তঃসত্ত্বা মহিলা তখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বা়ড়ির লোক হাত জোড় করে চিকিৎসককে অনুরোধ করেন, ‘যা করার এখানেই করুন ডাক্তারবাবু।’ পাশ থেকে এক নার্সও নাকি বলেছিলেন, ‘যে কোনও মুহূর্তে প্রসব হয়ে যেতে পারে। এখন অন্য জায়গায় পাঠানো কি ঠিক হবে?’’
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে কারও কোনও কথা কানে তোলেননি হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রসূতিকে বারাসত হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেন। বাড়ির লোকজন অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করেন। গাড়ি চলতে শুরু হওয়ার আগে অ্যাম্বুল্যান্সেই মহিলার প্রসব হয়ে যায়। শিশু ও মা দু’জনেই অবশ্য এখন হাবরা হাসপাতালে ভর্তি।
চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন জ্যোৎস্না দাস ও তাঁর স্বামী রমেশবাবু। লিখিত অভিযোগ না হলেও ঘটনার কথা মৌখিক ভাবে জেনেছেন হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের কাছে লিখিত ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তিনি মহিলাকে ওই অবস্থায় রেফার করতে গেলেন।’’
কিছু দিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার এক চিকিৎসকের অধীনে এক প্রসূতি ভর্তি হয়েছিলেন। প্রসবে দেরি আছে বলে প্রসূতিকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে যখন বাড়ি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছিল, তখন হাসপাতাল চত্বরেই সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা।
রমেশবাবুর বাড়ি নগরথুবায়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান তিনি। রমেশবাবুর প্রশ্ন, ‘‘স্ত্রীকে পরীক্ষা করেও চিকিৎসক কেন বুঝতে পারলেন না, যে কোনও সময়ে প্রসব হয়ে যেতে পারে? পথে যদি কোনও বিপদ ঘটত, তার দায় কে নিত?’’
অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্যোৎস্নাদেবীর উচ্চ রক্তচাপজনিত-কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সে কারণে বারাসতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন ওই চিকিৎসক। তবে রমেশবাবুর দাবি, ‘‘ওই চিকিৎসক যখন স্ত্রীকে দেখছিলেন, তখন পাশ থেকে এক নার্স বলেছিলেন, পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাচ্চা হবে। তারপরেও কেন ডাক্তার সেটা বুঝলেন না?’’