Dengue

জ্বরে ভুগে মৃত মহিলা, উত্তেজনা

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন আগে জ্বর ও পেটে ব্যথা নিয়ে মনোয়ারা ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে তাঁর শারীরির অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

হাবরা ও বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৩৯
Share:

মেঝেতে-ঠাঁই: উপচে পড়ছে জ্বরে আক্রান্ত রোগী। বসিরহাট হাসপাতালে।

জ্বরে আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে উত্তেজনা ছড়াল হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম মনোয়ারা গাজি (৪২)। বাড়ি বাদুড়িয়া থানার বাগজোলায়। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘ওই মহিলার রক্তে ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল। পেটে জলও জমেছিল।’’

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন আগে জ্বর ও পেটে ব্যথা নিয়ে মনোয়ারা ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে তাঁর শারীরির অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়। আত্মীয়েরা রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে বাড়ি যান টাকা আনতে। কিছুক্ষণ পরে ফিরে দেখেন, ততক্ষণে মারা গিয়েছেন মনোয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি আগে ভাগে মনোয়ারাকে রেফার করে দিত, তা হলে মৃত্যু ঘটত না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি।

Advertisement

এ দিকে, জ্বরের প্রকোপ কমার লক্ষণ নেই বাদুড়িয়ায়। এরই মধ্যে বাগজোলার কীর্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা নুর ইসলাম মণ্ডল (৩৮) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় ডেঙ্গির আতঙ্ক আরও ছড়িয়েছে। সোমবার রাতে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে মারা যান তিনি। তবে জ্বরে নয়, নুরের মৃত্যুর কারণ ‘হৃদরোগ’ বলে দাবি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।


মনোয়ারা গাজি

যা মানতে নারাজ এলাকাবাসী। বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলুও বলেন, ‘‘এক গ্রাম ছেড়ে জ্বর অন্য গ্রামে হানা দিচ্ছে। কোনও কোনও গ্রামে একবার জ্বরে আক্রান্তেরা ফের জ্বরে পড়ছেন। পরীক্ষায় ডেঙ্গির নমুনা মিললেও স্বাস্থ্যকর্তারা তা গোপন করার চেষ্টা করছেন। ফলে ডেঙ্গি হলেও প্রথম দিকে ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, গত দু’মাসে বাদুড়িয়ায় জ্বরে ভুগে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অবিলম্বে গ্রামে শিবির করা না হলে মানুষ আরও আতঙ্কিত হবেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আড়াই মাস ধরে বাদুড়িয়ার শ্রীরামপুর, মাগুলরখালি, কলিঙ্গা, চণ্ডীপুর, চাতরা-সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। কুলিয়া, নয়াবস্তিয়া, পিয়াড়া, বাজিতপুর, গন্ধর্বপুর, সায়েস্তানগরেও জ্বর ছড়িয়েছে। রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল উপচে পড়ছে জ্বরে আক্রান্ত রোগীতে। একই বিছানায় দু’তিন জন করে শুয়ে। অনেকের ঠাঁই হয়েছে মাটিতে।

মঙ্গলবার কীর্তিপুরে গিয়েছিলেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘টাকার অভাবে সময় মতো ডেঙ্গির পরীক্ষা করাচ্ছেন না অনেকে। যখন ডেঙ্গি ধরা পড়ছে, তখন অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। সরকারি চিকিৎসকেরা ভাইরাল ফিভার বলে পাশ কাটাতে চাইছেন।’’

বাদুড়িয়ার মতো বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকাতেও জ্বরের প্রকোপ শুরু হওয়ায় চিন্তিত প্রশাসন। জ্বরে বহু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেগঙ্গায়।

কী ভাবে পরিস্থতির মোকাবিলা করা সম্ভব, তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।

ছবি: নির্মল বসু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন